তিনশত ২৬ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বরখাস্ত হওয়া সেই অধ্যক্ষ ১৫ বছর ৮ মাস ২৭ দিন পর উচ্চ আদালতের নির্দেশে রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) স্বপদে পুনর্বহাল হয়েছেন। ঘটনাটি ঘটে কুমিল্লা দেবীদ্বার উপজেলার এলাহাবাদ ইউনিয়নের মোহাম্মদপুর সেরাজুল হক কলেজে।
উক্ত কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ও দেবীদ্বার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিগার সুলতানার স্বাক্ষরিত বৃহস্পতিবার ২৬ সেপ্টেম্বর তারিখের এক প্রজ্ঞাপনে রোববার মোহাম্মদপুর সেরাজুল হক কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুস সাত্তার তিনি তার স্বপদে পুনর্বহাল হন।
কলেজ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৫ সালে প্রতিষ্ঠা হওয়া ‘মোহাম্মদপুর সেরাজুল হক কলেজে’ আব্দুস সাত্তার ২০০২ সালের ৬ আগষ্ট অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেন। রাজনৈতিক প্রভাবে ২০০৭ সালে সাময়িক বরখাস্তের পর ২০০৯ সালের ১ জানুয়ারী মাত্র ৩২৬ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত হওয়া অধ্যক্ষ আব্দুস সাত্তার নিন্ম আদালত থেকে উচ্চ আদালতে দীর্ঘ আইনী লড়াইয়ের পর গত ৩০ এপ্রিল ২০২৪ সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি নাঈমা হায়দার হাইকোর্টের রায় বহাল রেখে কলেজ কর্তৃপক্ষের আপিল খারিজ করে তার সমুদয় বকেয়া বেতন ভাতাদীসহ অধ্যক্ষ পদে পুনর্বহালের নির্দেশে তিনি তার হারানো পদে পুনর্বহাল হলেন।
রোববার সকাল সাড়ে ১১টায় ব্যান্ড পার্টি বাজিয়ে ও পটকা ফুটিয়ে এক বর্নাঢ্য র্যালী বিভিন্ন শ্লোগানে এক আনন্দঘন পরিবেশে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসী তাকে কলেজ ক্যাম্পাসে নিয়ে আসেন। পরে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়ে কলেজের শিক্ষক- শিক্ষার্থীরা তাকে বরন করে নেন। দুপুর ১২ টায় কলেজ মিলনায়তনে তাকে সংবর্ধনায় এক সূধী সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
ওই সমাবেশে চাপাতলী ফাজিল মাদ্রাসার সাবেক অধ্যক্ষ মাওলানা মোহাম্মদ আলীর সভাপতিত্বে এবং অধ্যাপক আনোয়ার হোসেনের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, মো. নজরুল ইসলাম সরকার, অবঃ সমাজ সেবা কর্মকর্তা আলী হোসেন মিন্টু, অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, আব্দুর রহমান, মো. জালাল খান, জামাল হোসেন, অধ্যাপক আমির হোসেন, দেবীদ্বার উপজেলা প্রেসক্লাব সভাপতি এবিএম আতিকুর রহমান বাশার প্রমূখ। আলোচনা শেষে দোয়া ও মিলাদের আয়োজন করা হয়।
এ বিষয়ে অধ্যক্ষ আব্দুস সাত্তার বলেন, রাজনৈতিক প্রভাবে আমাকে বিনা দোষে হয়রানী করা হয়েছে। সাময়িক বরখাস্ত করাকালে আমার বেতন ভাতাদীর অর্ধেক দেয়ার নিয়ম থাকলেও সে ভাতা বন্ধ রাখা হয়। কলেজ প্রতিষ্ঠাতাদের হুমকীর মুখে আমি কুমিল্লায় বাসা নিয়ে থাকলেও সেখানেও পুলিশ পাঠানো হয়। উচ্চ আদালতে দায়ের করা মামলা তুলে নিতে হাইকোর্টের বারান্দা থেকে সন্ত্রাসী ক্যাডার দিয়ে আমাকে তুলে এনে নির্যাতন করে। আমার বিরুদ্ধে ৩২৬ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হলেও একজন অধ্যক্ষের ড্রয়ারে ৫শত টাকা পর্যন্ত রাখার নিয়ম ছিল।
এ ব্যাপারে দেবীদ্বার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও মোহাম্মদপুর সেরাজুল হক কলেজের সভাপতি নিগার সুলতানা বলেন, আদালত অধ্যক্ষ আব্দুস সাত্তারকে উক্ত কলেজে পুনর্বহালের নির্দেশ দিয়েছেন। আমি কাগজপত্র দেখে তাঁকে যোগদানের নির্দেশ দিয়েছি।