সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের কল্যাণে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর থেকে নিখোঁজ হওয়ার ১দিন পর শিশু মায়মুনা(৯)’কে দেবীদ্বারে ফিরে পেলো তার পরিবার। বুধবার (১৩মার্চ) দুপুর ২টায় দেবীদ্বার থানা কমপ্লেক্সে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নয়ন মিয়া মায়মুনাকে তাঁর পরিবারের নিকট হস্তান্তর করেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, যার ফেসবুক স্ট্যাটাসের ভিত্তিতে নিখোঁজ মায়মুনার সন্ধান মিলেছে সাংবাদিক শফিউল আলম রাজীব, থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই মাইনুল ইসলাম, পৌর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুল কাদের, মোঃ আবুল হোসেন, মায়মুনার মা মোসা: হামিদা খাতুন, নবীনগর উপজেলা মহিলা আওয়ামীলীগের নেত্রী সেলিনা আক্তার প্রমুখ।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার বিকেলে দেবীদ্বার নিউমার্কেট সেন্ট্রাল হাসপাতালের সামনে হাতে কাপরের ব্যাগ ও কাঁধে একটি বেনিটি ব্যাগ নিয়ে নয় বছরের শিশু মায়মুনা কাঁদতে থাকলে অনেক লোকের ভিড় জমে। সেখান থেকে সেন্ট্রাল হাসপাতালের মালিক আব্দুল আলিম শিশুটিকে দেবীদ্বার উপজেলা প্রেসক্লাবে নিয়ে আসলে দেবীদ্বার উপজেলা প্রেসক্লাবের উপদেষ্টা এবিএম আতিকুর রহমান বাশার মেয়েটিকে বাড়িতে পৌঁছে দেয়ার আশ্বস্তে শান্ত করেন এবং নাস্তা করান, একইদিন বিকেল ৫ টায় সেন্ট্রাল হাসপাতাল মালিক আব্দুল আলিম ও সাংবাদিক শফিউল আলম রাজীব শিশুটিকে দেবীদ্বার থানা হেফাজতে দিয়ে আসে। প্রেসক্লাবে শিশু মায়মুনার একটি সাক্ষাৎকার সাংবাদিক শফিউল আলম রাজীবের Rajib Sarker ফেসবুকে আপলোড করে যা প্রায় ৩ হাজার শেয়ার এবং ৩০ হাজারের অধিক লোকের দৃষ্টিগোচর হয়ে চলমান রয়েছে।
মেয়েকে নিতে এসে মায়মুনার মা হামিদা খাতুন জানান, মায়মুনা ঢাকা তার ভাইয়ের বাসায় বেড়াতে গিয়েছিল সেখান থেকে তার বড়ভাই রিফাত মঙ্গলবার সকালে নবীনগর নামিয়ে বাসায় যেতে একটি রিকশা করে দিয়ে ঢাকায় ফিরে যায়। পরে সে কিভাবে এখানে আসলো তা বলতে পারব না। আমরা গতকাল সারাদিন অনেক খোঁজাখুঁজি করেছি কোথাও পাইনি। সকালে মায়মুনার স্কুলের শিক্ষক আমাকে ডেকে নিয়ে একটি ভিডিও দেখিয়ে বলে মায়মুনা দেবীদ্বার থানায় আছে। পরে আমার পাশের বাসার সেলিনা আপা ওই ভিডিও দেওয়া ভাইয়ের সাথে যোগাযোগ করলে ওনি দেবীদ্বার থানায় যোগাযোগ করতে বলেন। আমি থানায় এসে আমার মেয়েকে সুস্থ অবস্থায় পেয়েছি।
সাংবাদিক শফিউল আলম রাজীব বলেন, আমি দেবীদ্বার উপজেলা প্রেসক্লাবে শিশু মায়মুনার সাথে কথা বলে একটি সাক্ষাৎকার নেই, সে ভিডিওটি আমার ফেসবুকে ‘মায়মুনা তার পরিবারে ফিরতে চায়’ ক্যাপশন দিয়ে আপলোড করি। পরে শিশুটিকে যখন পুলিশের হেফাজতে থানায় দিতে আসি, তখন সে মায়ের কাছে যাবে বলে কান্না করতে থাকে। তাকে বলি তোমার মাকে নিয়ে আসবো তুমি এখানেই থাকো। তার জন্য নিরাপদ ভেবেই থানা হেফাজতে রেখে যাই। আজ আমি আনন্দিত যে সত্যি সত্যি তাকে তার মায়ের কাছে পৌঁছে দিতে পেরেছি। দেবীদ্বার থানা পুলিশসহ সকলকে ধন্যবাদ জানাই যারা এই ভালো কাজের অংশীদার হতে আমাকে সহযোগিতা করেছেন।
দেবীদ্বার থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নয়ন মিয়া বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কল্যান অকল্যান দুটি দিকই আছে তবে তা নির্ভর করবে আপনি তা কোনদিকে ব্যাবহার করবেন। সাংবাদিক শফিউল আলম রাজীব ভাই ওনি মঙ্গলবার বিকেলে বাচ্চাটিকে পুলিশ হেফাজতে দিয়ে যান এবং ওনার ফেসবুকে শিশুটির সাক্ষাৎকারের একটি ভিডিও প্রকাশ করেন যে ভিডিওটি বহুল প্রচারের লক্ষ্যে আমরাও শেয়ার করেছি যা আমাদের কাজের সহায়ক হয়েছে। যার ফলে আজকে শিশু মায়মুনাকে তার পরিবারের কাছে সহজে পৌঁছে দিতে পেরেছি।