বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে প্রাণ হারিয়েছেন দেশের শত শত ছাত্র-জনতা। রক্ত ঝড়েছে হাজারো শিক্ষার্থীর। রং তুলির আঁচড়ে দেয়ালে গ্রাফিতি ও চিত্রাঙ্কনের মাধ্যমে তাদের স্মৃতিকে তুলে ধরার চেষ্টা করছে দেবীদ্বারের শিক্ষার্থীরা। বিবর্ণ অতীত মুছে দিয়ে দেয়ালে দেয়ালে ‘স্বপ্নলিপি’ আঁকছেন তারা। তাছাড়া ৫দিন যাবৎ দেবীদ্বারের যানজট নিরসনে ট্রাফিকের দায়িত্ব ও বাজার মনিটরিংয়ের দায়িত্ব পালন করছে শিক্ষার্থীরা।
শনিবার(১০) আগষ্ট দেবীদ্বার পৌরসদরের বিভিন্ন যায়গা ঘুরে দেখা যায়। শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন ইউনিটে বিভক্ত হয়ে কেউ চিত্রাঙ্কন করছেন, কেউ যানজট নিরসন আবার কেউ দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাজার মনিটরিং করতেও দেখা গেছে।
সড়কের পাশে দেয়ালে দেয়ালে শিক্ষার্থীরা লিখছেন দেশ সংস্কারের নানা স্লোগান; বিভিন্ন শিল্পকর্মও আঁকছেন। সদরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করছেন, বাজারে ঘুরে ঘুরে বাজারমূল্য ও ক্রয় রশিদ দেখছেন। দেবীদ্বারে অবস্থানরত বিভিন্ন বয়সের স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এ কর্মযজ্ঞে অংশ নেন। শিক্ষার্থীদের শিল্পকর্মে নজর কেড়েছে সাধারণ পথচারীদের। অনেকেই দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখেছেন তাদের নানামুখী সৃজনশীল এসব কর্মযজ্ঞ।
চিত্রাংকনে অংশ নেয়া দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী আয়শা বলেন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন, রক্ত ঝরিয়েছেন, তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আমরা দলবদ্ধ হয়ে দেয়ালে রং করে দেশের ঐতিহ্য, শহীদদের স্মৃতি ও আন্দোলনের স্মৃতি ফুটিয়ে তুলার চেষ্টা করছি।
ট্রাফিকের দায়িত্বে থাকা ক্যাডেট সিয়াম জানান, ট্রাফিক পুলিশ না থাকায় সড়কে যানজট নিরসনে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। নির্দিষ্ট স্থান ব্যাতীত গাড়ি পার্কিং, উল্টো পথে চলা কিংবা দাঁড়াতে দেয়া হচ্ছে না কাউকে। চালকরাও নিয়ম মেনে গাড়ি চলাচলের মাধ্যমে আমাদের কাজে সহযোগিতা হচ্ছে। পথচারীরাও রাস্তা পার হচ্ছেন শৃঙ্খলা মেনে।
বাজার মনিটরিংয়ে কাজ করা শিক্ষার্থী ফাহিমা আক্তার জানান, দেশের এমন পরিস্থিতিতে কোন অসাধু ব্যবসায়ী যেনো ভোক্তাদের ঠকিয়ে অধিক মোনাফা অর্জন করতে না পারে এবং তাদের আমদানিকৃত মালামালের রশিদ যাচাই করা হচ্ছে।
এসকল বিষয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, নতুন করে দেশ গড়ার প্রত্যয় তরুণদের। পুরো দমে দেশ সংস্কার করতে হবে। গত কয়েকদিন দেশে যে সহিংসতা হয়েছে, তা ভুলে গিয়ে নতুন এই বাংলাদেশকে ছাত্র-জনতা সকলে মিলে এগিয়ে নিতে হবে।