কুমিল্লায় রোডমার্চের উদ্বোধনী সমাবেশে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন,আমাদের দাবি একটাই, আমরা ভোট দিতে চাই। এই রোডমার্চের মাধ্যমে সরকারকে জানিয়ে দিচ্ছি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতে হবে। পদত্যাগের পর নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীবে নির্বাচন দিতে হবে। না হলে জনগণ জানে আপনাদের কীভাবে ক্ষমতা থেকে সরাতে হবে। বৃহস্পতিবার সকালে কুমিল্লার কালাকচুয়া এলাকায় কুমিল্লা-চট্টগ্রাম রোডমার্চের উদ্বোধনী সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
সরকার প্রধানের যুক্তরাষ্ট্র সফর নিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আমেরিকা থেকে উইড়া আসছে খালি হাতে। আজ সকল গণতান্ত্রিক শক্তি এক জোট হয়েছে। কথা পরিষ্কার, নির্বাচন হবে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে। আজকে তারা ভয় দেখায়। ভয়ে কোনো কাজ হবে না।’
জিনিসপত্রের দাম নিয়ে তিনি বলেন, আজকে ডিমের ডজন ১৫০ টাকা, বাচ্চাদের খাওয়াতে পারি না। আজ খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য যেতে দিচ্ছে না। তারা জানে খালেদা জিয়া সুস্থ হয়ে ফিরলেই আওয়ামী লীগ শেষ। বাংলাদেশে গণতন্ত্র থাকবে কি থাকবে না এবার নির্ধারণ হবে। তারা নাকি উন্নয়ন করছে। তারা আজ রূপপুরে ইউরেনিয়াম নিয়ে আসছে। ইউরেনিয়ামের কারণে মাইলের পর মাইল ধ্বংস হয়ে যাবে। কোনো নিরাপত্তা বিধান না করে দুর্নীতির জন্যই এমন প্রকল্প নিয়ে আসছে সরকার।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ক্ষমতাসীন সরকার আমাদের কথা বলতে দেয় না, কথা বললেই মামলা। তারা আন্দোলনে ২২ জনকে গুলি করে মেরেছে, সাতশ মানুষকে গুম করেছে, সহস্র মানুষকে হত্যা করেছে। চাঁদপুরের এক মন্ত্রীর সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, নদী থেকে ওই মন্ত্রীর সহায়তায় ৬ হাজার কোটি টাকার বালু লোপাট করা হয়েছে।
এক দফা দাবিতে ওই সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী,কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (কুমিল্লা বিভাগ) মোস্তাক মিয়া, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী, কর্মসংস্থান বিষয়ক সম্পাদক জাকারিয়া তাহের সুমন,সাবেক এমপি আনোয়ারুল আজিম, শিল্প বিষয়ক সম্পাদক আবুল কালাম, কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আক্তারুজ্জামান, সদস্য সচিব এএফএম তারেক মুন্সি, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব জসিম উদ্দিন, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক উৎবাতুল বারী আবু, সদস্যসচিব ইউসুফ মোল্লা টিপু প্রমুখ। এতে কুমিল্লা উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপি, মহানগর বিএনপি এবং ফেনী ও চাঁদপুর জেলা ইউনিটের নেতারা অংশ নেন। এতে সভাপতিত্ব করেন কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও কেন্দ্রীয় বিএনপির ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সম্পাদক হাজী আমিনুর রশিদ ইয়াছিন।
কুমিল্লার সমাবেশ শেষে রোডমার্চটি সোয়া ১১টার দিকে চট্টগ্রামের দিকে রওনা হয়। রোডমার্চ ঘিরে সকাল থেকে বৃষ্টির মধ্যেই নেতাকর্মীরা সমাবেশস্থলে হাজির হয়। সমাবেশস্থলে স্থান না পেয়ে অনেক নেতাকর্মী গাড়ি নিয়ে চট্টগ্রামগামী সড়কে অবস্থান নেয়। এতে সড়কে যানজটে যাত্রীদের ভোগান্তি দেখা দেয়। এ সময় অনেককেই গাড়ি থেকে নেমে পায়ে হেঁটে গন্তব্যে রওনা হতে দেখা যায়। জেলা ও হাইওয়ে পুলিশের চেষ্টায় দুপুরের দিকে মহাসড়কের কুমিল্লা অংশে যানবাহন চালাচল কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছে।