দেশের রাজধানীসহ বিভিন্ন স্থানে ৫.৫ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। সেই কম্পনে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) পাঁচ আবাসিক হলের দেয়ালে ফাটল দেখা দিয়েছে। এতে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে শিক্ষার্থীদের মাঝে। তবে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
শনিবার (২ ডিসেম্বর) সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটে এ ভূমিকম্প অনুভূত হয়।
সরেজমিনে দেখা যায় ,বঙ্গবন্ধু হলের ২০৯ নম্বর কক্ষের দেয়াল ও ৫০৪ নম্বর কক্ষের সামনের করিডরের মেঝের দুটি টাইলস উঠে গেছে। একই তলায় নতুন ও ব্লকের সংযোগস্থলের করিডোরে নতুন ফাটল দেখা গেছে। পাশাপাশি দক্ষিণ ব্লকের দুই করিডরের মাঝের সংযোগস্থলে পুরো পাঁচতলাব্যাপী ফাটল ধরেছে। এ ছাড়া নজরুল হলের দোতলার ২০৭ নম্বর কক্ষের দেয়ালে, টিভি রুমের সামনের পিলারের সংযোগস্থলে নতুন ফাটল দেখা গেছে।
নওয়াব চৌধুরানী ফয়জুনেজা হলের চার তলায় ৪০৩ রুমে এবং পাঁচ তলার ৫০৩,৫১১ রুমে এবং ছাদে ফাটল দেখা দিয়েছে। এছাড়াও হলের পুরাতন ফাটল গুলো বড় হয়ে গেছে। শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের ৫০০১ রুমেও ফাটল দেখা দেয়। এছাড়াও নতুন নির্মিত শেখ হাসিনা হলের রিডিং রুমে ফাটল দেখা দেয়।
কাজী নজরুল ইসলাম হলের আবাসিক শিক্ষার্থী মোহাম্মদ জোবায়ের আহমেদ বলেন, ভূমিকম্প শুরুর সময় আমি প্রেয়ার রুমে পড়ছিলাম হঠাৎ করে কম্পন শুরু হলে প্রথমে বুঝতে পারিনি কি হচ্ছে। তারপর যখন বুঝলাম ভূমিকম্প হচ্ছে তখন আমি দ্রুত ফাঁকা জায়গায় চলে যাই এবং হল থেকে অনেকেই বেড়িয়ে যেতে দেখি, এসময় ১৭ তম আবর্তনের আকাশ নামের একজন আহত হয়। ভূমিকম্প শেষে আমার হলে আসলে বিভিন্ন জায়গায় ফাটল দেখতে পাই। আজকে সকালে হঠাৎ করেই যখন দেখি রুমের জিনিসগুলো খুব জোরে নড়ছে তখন মনে মারাত্মক ভয় এর সৃষ্টি হয়েছে। মনে হচ্ছিল ভয়াবহ কিছু হতে চলছে। রুম থেকে বের হয়ে দেখি মেয়েরা সবাই এদিক সেদিক ছুটাছুটি করে নিচে নামছে। এরকম অভিজ্ঞতা এই প্রথমবার হয়েছে।
নওয়াব ফয়জুন্নেছা হলের আবাসিক শিক্ষার্থী আমেনা আক্তার বলেন, পরিস্থিতি যখন শান্ত হলে দেখি হলের কয়েকটি ফ্লোরে ফাটলের সৃষ্টি হয়েছে। ৪র্থ তলার তিন দিকে ও ৫ম তলার ছাদে ফাটল দেখা দিয়েছে। যা হল এ অবস্থানকারী মেয়েদের জন্য খুবই আতঙ্কের একটি বিষয়। পরবর্তীতে এরকম কোনো ভূমিকম্প হল ভেঙে পড়ে কি না এ বিষয়টি নিয়ে মেয়েরা খুবই ভয়ে আছে।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের তত্ত্ববধায়ক প্রকৌশলী এসএম শহিদুল হাসান বলেন, ভূমিকম্পে যে-সব ভবনে ফাটল সৃষ্টি হয়েছে সেগুলো ঝুঁকিপূর্ণ নয়। কারণ এই ভবনগুলোর দেয়াল এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে, যেখানে ভূমিকম্প হলে মূল কাঠামোতে সরাসরি প্রভাব পড়ার আগেই দেয়ালে প্রভাব পড়বে এবং ঝাঁকুনিটা দেয়ালেই লাগবেই। তিন তলা ভবনে পাঁচ তলা নির্মিত হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন এটা কখনো সম্ভব না। যে বলেছে সে হয়তো জানে না।
হল প্রভোস্টদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা পুরো বিষয়টা পর্যবেক্ষণ করে দ্রুত ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান। যোগাযোগের পর বঙ্গবন্ধু হলের প্রভোস্ট সরেজমিনে ফাটলগুলো পরিদর্শন করেছেন। তিনি জানান, দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দপ্তরে কথা বলবেন বিষয়টি দেখার জন্য।