কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায় ব্যবসায়ীকে হত্যার চেষ্টা ও মৎসখামার থেকে চাঁদাবাজির অভিযোগে কুমিল্লা-৩ (মুরাদনগর) আসনের আওয়ামীলীগের (সাবেক) এমপি ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুনসহ ১৬ জনের নামে থানায় পৃথক দুইটি মামলা হয়েছে। মামলায় আসামি করা হয়েছে অজ্ঞাত পরিচয়ে আরও ৫০ থেকে ৫৭ জনকে।
মঙ্গলবার রাতে মুরাদনগর থানায় উপজেলা সদরের ব্যবসায়ি আলমগীর হোসেন হত্যাচেষ্টা ও অ্যাডভোকেট মহসীন মিয়া চাঁদাবাজির মামলাগুলো করেন।
মামলার বাদী আলমগীর হোসেন, মুরাদনগর সদরের নায়েব আলীর ছেলে। অপর মামলার বাদী অ্যাডভোকেট মহসীন মিয়া উপজেলার ধামঘর ইউনিয়নের দড়িকান্দি গ্রামের মৃত আবদুল মালেকের ছেলে।
মামলা সুত্রে জানা যায়, ২০২০ সালের ২০শে মার্চ (শুক্রবার) রাতে উপজেলা সদরের বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন মোহাম্মদীয়া ইলেকট্রনিক্সের স্বত্বাধিকারী আলমগীর হোসেন তার দোকানে অবস্থানকালে সাবেক এমপি ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুনের নির্দেশে আওয়ামীলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের ৪০/৪৫ জন নেতাকর্মী ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সন্ত্রাসীরা তার দোকানে এসে ১০ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে। ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেন চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় তারা দেশীয় অস্ত্র দিয়ে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে কুপিয়ে এবং বেধরক পিটিয়ে মাথা, হাত, পায়ে রক্তাক্ত জখম করে। দোকানের ক্যাশে থাকা তিন লক্ষ সত্তর হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এই মামলায় ১৫ জনকে এজাহার নামীয় ছাড়াও ৪৫জনকে অজ্ঞাত আসামী করা হয়েছে।
চাঁদাবাজি মামলার বাদী অ্যাডভোকেট মহসীন বলেন, ২০১৯ সালে মুরাদনগর উপজেলার ধামঘর ইউনিয়নের দড়িকান্দি বিলে কৃষকদের থেকে ৩০০কানি জমি ১২বছরের জন্য পত্তন নিয়ে মোল্লা ফিসারিজ নামে মাছের প্রজেক্ট গড়ে তুলি। এই প্রজেক্টে মাছ চাষ করার জন্য দাউদকান্দি উপজেলার বারপাড়া গ্রামের মিজানুর রহমানের নিকট ১৬লক্ষ ৬৬হাজার টাকা বাৎসরিক হিসেবে ভাড়া প্রদান করি। প্রজেক্টে মাছ চাষের পর ২০২০সালের ১০ই সেপ্টেম্বর মিজানুর রহমান যখন মাছ ধরতে আসেন তখন সাবেক এমপি ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুনের নির্দেশে উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানার খামার গ্রামের রফিকুল ইসলাম (টিয়া রফিকের নেতৃত্বে ১০/১৫জন সন্ত্রাসী এসে মোল্লা ফিসারীজ প্রজেক্টে মাছ ধরা বন্ধ করে দেয় এবং ২৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। চাদাঁ না দিলে প্রজেক্টের মাছ ধরতে দিবে না বলে হুমকি প্রদান করে। এসময় বাধ্য হয়ে প্রজেক্টের এক বছরের ভাড়ার ১৬লক্ষ ৬৬হাজার টাকা রুপালী ব্যাংকের একটি হিসাব নম্বর থেকে সাবেক এমপির উপস্থিতিতে চেকের মাধ্যমে রফিকুল ইসলাম নিয়ে নেয়। এই মামলায় সাবেক এমপি ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুন ও রফিকুল ইসলামকে আসামিসহ অজ্ঞাতনামা আরো ১০/১২জনকে আসামী করা হয়েছে।
এ বিষয়ে মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুবুল হক বলেন, হত্যাচেষ্টা ও চাঁদাবাজির অভিযোগে থানায় ২টি মামলা হয়েছে। তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।