কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) আইন অনুযায়ী অধ্যাপকদের মধ্য থেকে ক্রমান্বয়ে বিভাগীয় প্রধান নিয়োগ দেওয়ার কথা থাকলেও বিভিন্ন বিভাগে বিভাগীয় প্রধান নিয়োগ দিতে এ আইন মানেননি কুবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএফএম আবদুল মঈন। বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার প্রশাসনকে চিঠি দিয়েও কোনো উত্তর না পাওয়ায় আদালতে রিট করেন পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের। রিট আবেদন অনুযায়ী অধ্যাপক তাহেরকে বিভাগীয় প্রধানের পদ দিতে রায় দিয়েছে আদালত।
মঙ্গলবার বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি জাফর আহমেদ ও মো. বশির উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।
রায়ে আগামী এক মাসের মধ্যে অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহেরকে বিভাগীয় প্রধান পদে নিয়োগ দিতে বলেছে আদালত। এছাড়া সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জুলহাস মিয়াকে বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব দেওয়া কেন বেআইনি হবে না, প্রশাসনকে তা আগামী ১০ দিনের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় আইন এর ২৪ (২) ধারায় বলা হয়েছে, ‘বিভাগীয় অধ্যাপকদের মধ্য হইতে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে পালাক্রমে তিন বৎসর মেয়াদে ভাইস-চ্যান্সেলর কর্তৃক বিভাগীয় প্রধান নিযুক্ত হইবেন’। এ আইন অনুযায়ী বিভাগে কোনো অধ্যাপক না থাকায় ২০২০ সালের ১৭ জুন বিভাগীয় প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জুলহাস মিয়াকে। ওই পদে জুলহাস মিয়ার তিন বছর মেয়াদ শেষ হওয়ার পর গত ১৫ জুন ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো. আমিরুল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে জুলহাস মিয়াকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব পালন করে যেতে বলা হয়।
বিষয়টিকে আইনের ব্যত্যয় উল্লেখ করে করে ১৮ জুন বিভাগীয় প্রধানের পদ পেতে অধ্যাপক তাহের রেজিস্ট্রার বরাবর চিঠি দেন। পরবর্তীতে ৯ জুলাই একই দাবিতে উপাচার্য বরাবর চিঠি দেন অধ্যাপক তাহের। প্রশাসন বিষয়টি আমলে না নিলে আদালতে রিট করেন তিনি। শেষ পর্যন্ত আদালত তাঁর পক্ষে রায় দেয়।
এ বিষয়ে অধ্যাপক ড. আবু তাহের বলেন, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী আমি বিভাগীয় প্রধান হই। কিন্তু উপাচার্য সুস্পষ্টভাবে আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে ড. জুলহাস মিয়াকে কন্টিনিউ করিয়েছেন। আমি আইন অনুযায়ী বিভাগের প্রধানের জন্য রেজিস্ট্রার এবং উপাচার্য বরাবর চিঠি দিয়ে কোন প্রতিকার না পেয়ে অধিকার আদায়ের জন্য আদালতের দ্বারস্থ হই, যেটা আমার পক্ষে রায় আসছে।
এ বিষয়ে কথা বলতে চাইলে রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) মো. আমিরুল হক চৌধুরী নিজেদের আইনজীবীর সাথে পরামর্শ করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান।