দুর্নীতি ও নানান অনিয়মের অভিযোগে দেবীদ্বার উপজেলার ঐতিহ্যবাহী রামপুর জামেয়া ইসলামিয়া কাসেমুল উলুম মাদ্রাসার মুহতামিম হাফেজ মো. সালমান পদত্যাগ করেছেন। সোমবার (১৪অক্টোবর) বিকালে মাদ্রাসা কার্যালয়ে তিনি ওই পদত্যাগ পত্রে স্বাক্ষর করেন। এর আগে সকাল থেকে আশে পাশের কয়েক গ্রামের লোকজন ও শিক্ষার্থীরা ওই মুহতামিমের পদত্যাগের দাবিতে মাদ্রাসায় মুহতামিমের অফিস ঘেরাও করে রাখেন।
জানা গেছে, ১৯৮৬ সালে দেবীদ্বার উপজেলার ঐতিহ্যবাহি রামপুর জামেয়া ইসলামিয়া কাসেমুল উলুম মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত মুহতামিমের দায়িত গ্রহন করেন হাফেজ মো. সালমান। তিনি দায়িত্ব গ্রহনের পর মাদরাসায় একক আধিপত্য গড়ে তুলার মধ্যদিয়ে বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতায় জড়িয়ে পড়েন। নিজের আধিপত্যকে টিকিয়ে রাখতে যখন যে সরকার ক্ষমতায় এসেছেন সে সরকারের এমপি ও নেতাকর্মীদের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তুলতেন তিনি।
বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের আমলেও নেতাদের ছত্রছায়ায় থেকে মাদ্রাসাকে নিজের একক সাম্রাজ্যে পরিনত করেছেন। এছাড়াও শিক্ষার্থীর সাথে অনৈতিক কর্মকান্ডের অভিযোগে ২০১০ সালে জেলে যেতে হয় ওই মুহতামিমকে, পরে তিনি ওই মামলায় নির্দোষ প্রমানের মাধ্যমে খালাস পান। এরপর মাদ্রাসায় কয়েক হাজার শিক্ষার্থী থেকে কমতে কমতে ৬০/৭০ জনে চলে আসে। মাদ্রাসা রক্ষায় এলাকাবাসী ঐক্যবদ্ধ হয়ে সোমবার সকালে মুহতামিমের পদত্যাগের দাবিতে তার অফিস ঘেরাও করে রাখলে বিকালে তিনি পদত্যাগ পত্রে স্বাক্ষর করেন। পরে পুলিশ হেফাজতে মুহতামিমকে তার বাড়ি পৌছে দেয়া হয়।
স্থানীয় মেম্বার সফিকুল ইসলাম কালু বলেন, কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রওশন আলী মাস্টার মাদ্রাসার সভাপতি হিসেবে প্রতিষ্ঠানটির অনেক অবকাঠামোর উন্নয়ন করেন। কিন্তু মাদ্রাসার অবস্থা যখন খারাপ হতে থাকে, তখন তিনি সব আয় ব্যায়ের হিসাব দেখতে চান। ওই সময় সালমান হুজুর হিসাব দিতে অপরাগতা প্রকাশ করেন এবং স্থানীয় এমপির সহায়তায় জোরপূর্বক সভাপতি পদথেকে রওশন আলী মাস্টারকে বাদ দেন। তিনি সব সময়ই নিজের পছন্দের লোকজন দিয়ে কমিটি করে, নিজের অবস্থান শক্তিশালি রেখেছেন। তাই জনতার দাবির মুখে তিনি পদত্যাগ করেছেন।
পদত্যাগী মুহতামিম হাফেজ মো. সালমান বলেন, আমি দাবির মুখে পদত্যাগ করতে বাধ্য হই। কিন্তু আমাকে মাদ্রাসার হিসাব দেওয়ার সুযোগ করে দিতে হবে। যাতে আমি হিসাব দেওয়ার মাধ্যমে নিজেকে নির্দোষ প্রমান করতে পারি।
এবিষয়ে দেবীদ্বার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিগার সুলতানা বলেন, ছাত্রজনতার দাবির মুখে রামপুর মাদ্রাসার মুহতামিম হাফেজ মো. সালমান পদত্যাগ করেছেন, এমনটা আমি শুনেছি। তবে লিখিত কোন কাগজপত্র পাইনি।