কুমিল্লার দেবীদ্বারে ইউপি চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে এক সংখ্যালঘুর বাড়িতে হামলা ও মারধরের ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাটি ঘটে সোমবার সকাল সাড়ে ১১টায় দেবীদ্বার উপজেলার জাফরগঞ্জ ইউনিয়নের বেগমাবাদ গ্রামের ধীরেন্দ্র সাহার বাড়িতে। ওই হামলার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও ভাইরাল হলে এলাকায় তীব্র সমালোচনার ঝর উঠে।
স্থানীয়রা জানান, ধীরেন্দ্র সাহার পুত্র প্রবীর সাহার বাড়ির সাথে ক্রয়কৃত ২ শতাংশ জমি বাড়ির সাথে মিলিয়ে টিনের সীমানা ভেঙ্গে পাকা প্রাচীর নির্মাণ করতে গেলে, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জাহিদুল আলম নিজেই ওই বাড়িতে গিয়ে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ ও সীমানা প্রাচীর নির্মাণ শ্রমিকদের বাঁধা, নির্মাণ সামগ্রী ভাংচুর, ফেলে দেয়া এবং প্রবীর সাহার উপর হামলা করেন। ওই ঘটনায় সংবাদ পেয়ে দেবীদ্বার থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সাধন চন্দ্র নাথ’র নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
আহত প্রবীর সাহা দেবীদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা সেবা নিতে এসে জানান, আমার চাচাতো ভাই শংকর সাহা থেকে প্রায় ২০ বছর পূর্বে আমার ঘরের পাশে চান্দিনা মৌজার সাবেক ১৭৭ নং দাগ এবং বর্তমান হাল দাগ নং ৩৬৯’র ১১৫ নং খতিয়ানের ২ শতাংশ জমি ক্রয় করে টিনের বেড়া দিয়ে সীমানা নির্ধারণ করে রাখি। আজ পাকা বাউন্ডারী দিতে গেলে জাহিদ চেয়ারম্যান তার দলবল নিয়ে এসে আমার বাউন্ডারী ভেঙ্গে ফেলে, অকথ্যভাষায় গালমন্দ করে, নির্মান সামগ্রী ফেলে দেয় এবং নির্মাণ শ্রমিকদের ভীতি প্রদর্শনে কাজ বন্ধ করে দেয়। আমাকে চর থাপ্পর, ঘার ধরে ধাক্কা এক পর্যায়ে কোদালের বাট ভেঙ্গে আমার পেটে ঢুকিয়ে দেয়, পরে আমি হাসপাতাল এসে চিকিৎসা সেবা নেই।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ৮নং জাফরগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান জাহিদুল আলম বলেন, এই জায়গা নিয়ে তিন ইউপি চেয়ারম্যান ও এলাকার গন্যমান্য লোকজনকে নিয়ে গত ৪ আগস্ট সালিশ করা হয়। সালিশে আপন রায় নামের এক প্রতিবেশির বাড়ির সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি করণে প্রবীর সাহাকে এক লক্ষ টাকার বিনিময়ে এক শতাংশ জমি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু প্রবীর সাহা সালিশের ওই রায় না মেনে টিনের সিমানা প্রাচীর ভেঙ্গে পাকা ওয়াল নির্মাণ করার চেষ্টা করে। পাকা ওয়াল নির্মান না করার জন্য আমি ইতিমধ্যে প্রবীর সাহাকে দুটি লিখিত নোটিশ করি, তা অমান্য করে আজ পাকা ওয়াল নির্মাণ করতে গেলে আমি বাঁধা দেই। সে আমাকে আরো বলে, আমার জায়গায় আমি ওয়াল করবো আপনাকে জিজ্ঞেস করতে হবে কেন ?
এ ব্যাপারে দেবীদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ কমল কৃষ্ণ ধর জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেব। তবে ভূমি সংক্রান্ত বিষয় হওয়ায় আদালতের আশ্রয় নেওয়া ভালো হবে বলে পরামর্শ দিয়েছি।