কুমিল্লার দেবীদ্বারে ৬ সন্তান নিয়ে উপজেলার পোমকাড়া গ্রামে অন্যের বাড়িতে দরজা জানালা বিহীন ভাঙা ঘরে বসবাস করা সেই মামুন-নিলুফা দম্পতিকে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর উপহার দেওয়া হয়েছে। রবিবার বিকেলে ‘৬ সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবন’ শিরোনামে দৈনিক ভোরের সূর্যোদয় সহ একাধিক গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিগার সুলতানার নজরে আসে বিষয়টি। তিনি তাৎক্ষণিক জেলা প্রশাসকের সাথে কথা বলে ১ঘন্টার মধ্যে ঘটনাস্থলে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রায়হানুল ইসলামকে পাঠিয়ে ওই অসহায় পরিবারটিকে উপজেলার সুবিল ইউনিয়নের বুড়িরপার উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয় প্রকল্পে ঘরের ব্যবস্থা করে দেন। এসময় বুড়িরপার ৩নং ওয়ার্ড মেম্বার সোহেল নেয়ামত সহ এলাকার গান্যমান্য লোকজনের উপস্থিতিতে আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘরের চাবি ঐ পরিবারের কর্তা মামুন মিয়ার হাতে তুলে দেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রায়হানুল ইসলাম।
এমন সংবাদে অসহায় পরিবারের নিকট খাবার নিয়ে ছুটে আসেন উপজেলার পৌর ভূষনা গ্রামের ব্যাবসায়ী মোঃ সোহেল মিয়া। সোমবার বিকেলে ১ মাস চলার মতো খাদ্যসামগ্রী, চাল, ডাল, তৈল, আটা, মাছসহ যাবতীয় মসলা সামগ্রী নিয়ে বুড়িরপার প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ন প্রকল্পে গিয়ে ঐ পরিবারের নিকট খাবার পৌছে দেন তিনি। এসময় উপস্থিত ছিলেন, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষক সাংবাদিক এবিএম আতিকুর রহমান বাশার, কমিউনিষ্ট পার্টি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কমরেড পরেশ কর, সুবিল ইউপি চেয়ারম্যান গেলাম সারোয়ার মুকুল ভূইয়া, নিজেরা করি জেলা সংগঠক আব্দুল জব্বার প্রমুখ। সোহেল মিয়া জানান, খাদ্যসামগ্রী নিয়ে অসহায় পরিবারটির পাশে দাঁড়াতে পেরে আমার খুবই ভালে লাগছে। তাঁদেরকে দুটি ফ্যান ও থাকার বিছানাপত্র ব্যাবস্থা করে দেয়া হবে।
সোমবার বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ন প্রকল্পে ঘর পেয়ে স্বামী সন্তানদের নিয়ে আনন্দে আত্মহারা ছয় সন্তানের জননী নিলুফা আক্তার। এসময় তিনি জানান, সাংবাদিকদের ঋণ আমি কখনো শোধ করতে পারবোনা। আপনাদের সহযোগিতার কারনেই স্বামী সন্তান নিয়ে একটি মাথা গুজার ঠাই পেলাম। এখন বৃষ্টি এলে আর হাড়ি পাতিল নিয়ে দিকবিদিক দৌড়াতে হবেনা। এখন কোনরকম ডাল ভাত খেয়ে সন্তানদেরকে মানুষ করে মরতে পারলেই হয়।
এবিষয়ে দেবীদ্বার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিগার সুলতানা বলেন, সংবাদপত্রের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পেরে তাৎক্ষণিক জেলা প্রশাসক স্যার’র সাথে কথা বলে অসহায় পরিবারটিকে বুড়িরপার আশ্রয়ন প্রকল্পে একটি ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে। খুব দ্রুতই তাদের নামে কাগজপত্র তৈরি করে দেওয়া হবে। এছাড়াও ঐ পরিবারটি যেনো সকল ধরনের সরকারি সুযোগ সুবিধা পায় তার নিশ্চিত করা হবে।