কুমিল্লার দেবীদ্বারে পরীক্ষা কেন্দ্রে এসে ২৬ শিক্ষার্থী অসুস্থ্য হওয়ার সংবাদ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটে বুধবার (৪ ডিসেম্বর) বিকেলে দেবীদ্বার উপজেলার বড়শালঘর ইউএম ই উচ্চ বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা চলাকালে দ্বিতীয় শিফট’এ সপ্তম ও নবম শ্রেণীর পরীক্ষার্থীদের কক্ষে।
শিক্ষার্থী ও অভিভাবকগন জানান, ওই বিদ্যালয়ে প্রথম শিফটে সকাল ১০ টা থেকে বেলা ১ টা পর্যন্ত ষষ্ঠ ও অষ্টম শ্রেণীর ৫০১ জন পরীক্ষার্থী বার্ষিক পরীক্ষায় অংশ নেন। দ্বিতীয় শিফটে বেলা ১-৩০ মিঃ থেকে সপ্তম ও নবম শ্রেণীর ৪২৬ জন পরীক্ষায় অংশ নেয়। হঠাৎ বিকেল সাড়ে ৩টার সময় পরীক্ষা কেন্দ্রে শিক্ষার্থীরা অসুস্থ্য হতে থাকে। একের পর এক অসুস্থ্য ও অচেতন হয়ে পড়ায় পরিক্ষা কেন্দ্রে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। অসুস্থ্য শিক্ষার্থীদের দ্রুত দেবীদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিতে পাঠানো হয়। অভিভাবকদের অনেকেই তাদের সন্তানদের বাড়িতে নিয়ে যান বলেও তারা জানান।
অসুস্থ্য নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থী সামিয়া সুলতানা জানান, হঠাৎ কোন কারন ছাড়াই আমরা অসুস্থ্য হয়ে পড়ি, জ্ঞান ফিরে আসার পরই বুঝতে পারি হাসপাতালে ভর্তি আছি। সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষার্থী রিয়া মনি এবং জান্নাতুল ফেরদৌসী জানান, একজন ছাত্রী অসুস্থ্য হওয়া দেখে আরেকজন দেখে চিৎকার করে অসুস্থ্য হয়ে যাচ্ছে। তাদের দেখাদেখি আমরাও অসুস্থ্য হয়ে যাই। জ্ঞান ফেরার পর বুঝতে পারি হাসপাতালে ভর্তি আছি।
এ ব্যাপারে নবম শ্রেণীর এক শিক্ষার্থীর বাবা আলী হোসেন অভিযোগ করে বলেন, বিদ্যালয়ে এতোবড় একটি ঘটনা ঘটল অথচ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোন চিকিৎসক কিংবা এ্যাম্বুলেন্স ডেকে আনেননি।
দেবীদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ মোঃ সাইফুল ইসলাম শুভ জানান, বিকেল থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ১১ জন ছাত্রী হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছি। অসুস্থ্য হওয়া সম্পর্কে তিনি জানান, এটা হিষ্ট্রিয়া রোগ, ভয় থেকে এটা হয়। একজনের দেখাদেখি আরেকজন অসুস্থ্য হয়, বিশ্রামে থাকলে সুস্থ্য হয়ে যাবে।
ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীরা হলেন, বড়শালঘর গ্রামের সায়মা আক্তার(১৩), মাহিয়া আক্তার(১৪), জান্নাত(১৪), রিয়া মনি(১৫), আফরিনা আক্তার(১৬), ছামিয়া আক্তার(১৪), ছোটশালঘর গ্রামের উম্মে হানি(১৫), ফাহিমা আক্তার(১৭), জান্নাতুল ফেরদৌস(১৪), ইষ্টগ্রামের সামিয়া আক্তার(১৫) এবং দেবীদ্বার পৌর এলাকার অনিকা তাবাসসুম(১৫)।
এ ব্যপারে বড়শালঘর ইউএমই উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মুজিবুর রহমান জানান, অসুস্থ্য ছাত্রীদের দ্রুত দেবীদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠিয়ে আমি নিজেও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে রোগিদের খোঁজ খবর রাখছি। গত ১৫ দিন পূর্বে একই নিয়মে আরো ৪ জন ছাত্রী অসুস্থ্য হয়েছিল।
রাত সাড়ে ৯টায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিগার সুলতানা জানান, বিষয়টি শুনে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ দিয়েছি। আগামীকাল বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নিতে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে বলা হয়েছে।