দেশের অর্থনীতির লাইফলাইন হিসেবে পরিচিত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক। এই মহাসড়কে অন্য মহাসড়কের চেয়ে দ্বিগুণ মানুষজন যাতায়াত করেন। একই সঙ্গে কুমিল্লা-নোয়াখালী, কুমিল্লা-চাঁদপুর আঞ্চলিক সড়ক, কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কে যাতায়াত করেন লাখ লাখ মানুষজন। ঈদযাত্রা নিরাপদ ও ভোগান্তিমুক্ত করতে উচ্ছেদ অভিযানসহ নানা উদ্যোগ নিয়েছে হাইওয়ে পুলিশ, সড়ক ও জনপথ এবং পরিবহন সংগঠনের নেতারা।
এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য- মহাসড়কে তিন চাকার যান চলাচল ও চাঁদাবাজি বন্ধ, দুর্ঘটনা রোধে ফিটনেসবিহীন গাড়ি চলাচল বন্ধ, মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে অস্থায়ী বাজার বসতে না দেওয়া এবং কঠোর ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা। এসব কারণে ঈদযাত্রা স্বস্তির হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট মুক্ত রাখতে এবং কোরবানির পশুবাহী ট্রাক নির্বিঘ্নে মহাসড়ক দিয়ে দেশের এক স্থান থেকে অন্যস্থানে যাতায়াতের জন্য ( ১৩ জুন) বৃহস্পতিবার দুপুরে কুমিল্লা নিমসার বাজার থেকে দাউদকান্দি পর্যন্ত পরিদর্শন করেন হাইওয়ে কুমিল্লা রিজিয়নের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. খাইরুল আলম । এসময় উপস্থিত ছিলেন ময়নামতি হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইকবাল বাহার মজুমদার, ইলিয়টগঞ্জ হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনজুরুল আলম,দাউদকান্দি হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীনুল আলম, মিয়ার বাজার হাইওয়ে থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এস এম লোকমান হোসেন প্রমৃখ।
হাইওয়ে পুলিশের কুমিল্লা রিজিয়নের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. খাইরুল আলম বলেন ঈদযাত্রা নিরাপদ ও স্বস্তির করতে আমরা সব প্রস্তুতি নিয়েছি। ইতোমধ্যে যানবাহনের মালিক-শ্রমিক সংগঠনগুলোর সঙ্গে সমন্বয় বৈঠক করেছি ও তাদেরকে বিভিন্ন নির্দেশনা দিয়েছি।
কোরবানির জন্য বহনকারী পশুর ট্রাক কোনমতেই কোথাও থামানো যাবে না । হাইওয়ে রিজিয়নের ২২টি থানা-ফাঁড়ি এলাকায় ৬৪ টি পেট্রোল টিম থাকবে। পাশাপাশি জরুরি সেবায় থাকবে ২৫ টি কুইক রেসপন্স টিম। যেকোনো দুর্ঘটনা বা প্রতিবন্ধকতা দূর করতে পাঁচটি সরকারি ও ২২টি বেসরকারি রেকার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ ছাড়া পর্যাপ্ত সংখ্যক অ্যাম্বুলেন্স থাকছে দুর্ঘটনায় হতাহতের সেবার জন্য। নিজস্ব দুটি এ্যাম্বুলেন্স ও ২২ থানায় ২২ টি এ্যাবুলেন্স থাকবে বলে জানিয়েছেন । সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া মহাসড়কে যানবাহন ও গরু গাড়ী বোঝাইকৃত ট্রাক না থামানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে উল্লেখ খাইরুল ইসলাম বলেন, এতে নির্বিঘ্নে যান চলাচল করতে পারবে। ২৫ টি গোয়েন্দা টিম কাজ করবে। একটি পূর্ণাঙ্গ কন্ট্রোলরুম থাকছে। পাশাপাশি থাকছে ২২ টি সাব-কন্ট্রোলরুম। ৮২১ কিলোমিটার জাতীয় ও আঞ্চলিক সড়কে কোথাও কোনও সংগঠন কিংবা চক্র চাঁদাবাজি করলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
হাইওয়ে পুলিশের পাশাপাশি এবার ঈদে বিশেষ ইউনিফর্মে হাইওয়ে কমিউনিটি পুলিশিংয়ের প্রশিক্ষিত সদস্য মাঠে থাকবে বলেও জানান পুলিশ সুপার খাইরুল আলম । তিনি বলেন, একটি স্পেশাল টিমসহ মহাসড়কে শৃঙ্খলা তদারকি করবো আমি। অবশ্য সবার আগে মালিক, চালক ও যাত্রীদের পরিবহন আইন মানতে হবে। ফিটনেসবিহীন গাড়ি নামানো যাবে না। অনাকাঙ্ক্ষিত কোনও দুর্ঘটনা না ঘটলে এবারও দক্ষিণের ঈদযাত্রা হবে নিরাপদ ও স্বস্তিদায়ক। দাড়িয়ে ডিউটি করবে ২২ টিম। বাইশটি থানায় মোবাইল টিম ৪৮ টি থাকবে। রাস্তায় কোনো নির্মাণ সামগ্রী থাকতে পারবে না রাস্তায় এমন কিছু থাকতে পারবে না যা থাকলে যান চলাচলে বিঘ্নিত হয় এমন নির্দেশনা দিয়েছেন হাইওয়ে পুলিশ সুপার । তিনি আরও জানান,হাইওয়েতে কোন থ্রি হুইলার চলতে পারবে না এবং উল্টোপথে কোন সিএনজি চালিত অটোরিকশা থাকতে পারবে না।