স্থানীয় সূত্রে আরও জানা গেছে, সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) রাতে উপজেলার বাতিসা ইউনিয়নের কালিকাপুর গ্রামের আমির হোসেনের ঘরে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লাগে। পাশাপাশি ঘর হওয়ায় মুহুর্তের মধ্যে আগুন ছড়িয়ে পড়ে আশেপাশের ঘরগুলোতে। সংবাদ পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দু’টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছালেও গ্রামের প্রবেশের রাস্তা সরু হওয়ায় এবং পর্যাপ্ত পানির ব্যবস্থা না থাকায় আগুন নিভাতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস। একই সাথে স্থানীয়দের শত চেষ্টাও ব্যর্থ হয়। এ সময় পুড়ে যায় আলী আশ্রাফ, ইউসুফ মিয়া, আমির হোসেন, কাউছার আলম ও হাসানুজ্জামানের বসত ঘর সহ আরও কয়েকটি ঘর।
আগুনের হাত থেকে রক্ষা পেতে হুড়োহুড়ি করে বের হওয়ার সময় টিনের সাথে আঘাত পেয়ে ইসমাইল হোসেন ও আরমান মিয়া নামে দুইজন গুরুতর আহত হয়। স্থানীয়রা তাদেরকে উদ্ধার করে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে ৫টি বসতঘর সম্পূর্ণ পুড়ে যাওয়ায় ওই পরিবারের ২৩ জন সদস্য এখন খোলা আকাশের নীচে বসবাস করছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা আবুল কালাম বলেন, আগুনের সূত্রপাত হওয়ার সাথে সাথে গ্রামবাসীরা পানি নিয়ে এগিয়ে যায়। সময়মত ফায়ার সার্ভিসও ঘটনাস্থলে আসে। কিন্তু প্রবেশ পথ সরু ও ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা হওয়ায় এবং পর্যাপ্ত পানির ব্যবস্থা না থাকায় আগুন নিভানো সম্ভব হয়নি। যার কারণে ৫টি ঘরই পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
কিডনী আক্রান্ত রোগী ও ভুক্তভোগি কাউছার বলেন, আমি দীর্ঘদিন যাবৎ কিডনী রোগে আক্রান্ত। আগামী ১৯ ডিসম্বের ঢাকার সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে কিডনী পাথর অপারেশনের কথা ছিলো। বিভিন্নজনের কাছ থেকে ধার-দেনা করে ২ লাখ ৩০ হাজার টাকা জমা করে টাকাগুলো ঘরে রাখি। সর্বনাশা আগুনে আমার চিকিৎসার টাকা সহ বসত ঘর পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এখন আমি কি দিয়ে চিকিৎসা করাবো? কোথায় থাকবো ভেবে কুল পাচ্ছি না।
এ বিষয়ে চৌদ্দগ্রাম ফায়ার সার্ভিস স্টেশন কর্মকর্তা মেহেদী হাসান সুজন বলেন, ‘সংবাদ পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট দ্রæত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। কিন্তু পানি স্বল্পতার কারণে আগুন নিভাতে আমাদের বেগ পেতে হয়েছে। তাই ঘরগুলো পুড়ে ছাই হয়ে যায়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকেই আগুনের সূত্রপাত হয়েছে।’
চৌদ্দগ্রাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ বলেন, ‘আগুনে ৫টি ঘর পুড়ে যাওয়ার সংবাদ পেয়েছি। প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারদের জন্য পর্যাপ্ত কম্বল ও প্রয়োজনীয় খাবার পৌঁছে দেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করেছি। সরকারিভাবে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারকে আর্থিক সহায়তার চেষ্টা করা হচ্ছে।’