কুমিল্লার মেঘনা উপজেলায় চুরির ঘটনা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে গেছে। গত কয়েক মাস ধরে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে অটোরিকশা চুরি, দোকানে হানা এবং বাড়িতে চুরির মতো একাধিক ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
সাম্প্রতিক চুরির ঘটনাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত সোনাকান্দা গ্রামের আক্তার হোসেনের বাড়িতে চুরির ঘটনা। রোববার (২২ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে এই চুরির ঘটনা ঘটে। চোরেরা ঘরের তালা ভেঙে ৬ লাখ ২০ হাজার টাকা ও ৬ ভরি স্বর্ণালংকার নিয়ে যায়।
ভুক্তভোগী আক্তার হোসেন জানান, “এই সঞ্চয় আমাদের জীবনের গতি ঠিক রাখতে সাহায্য করত। হঠাৎ এমন ক্ষতি আমাদের কঠিন অবস্থায় ফেলে দিয়েছে।” তিনি আরও জানান, ঘটনার সময় তারা ঢাকায় অবস্থান করছিলেন এবং ঘর তালাবদ্ধ ছিল। এই সুযোগেই চোরেরা তাদের ঘরে হানা দেয়। বিষয়টি নিয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে পরিবার। তবে এখনও তাদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা কাটেনি।
উপজেলার অন্যান্য গ্রামেও চুরির ঘটনা বাড়ছে। দোকান থেকে মালামাল চুরি, রাতের আঁধারে অটোরিকশা চুরি এবং কখনও কখনও ছিনতাইয়ের মতো ঘটনাগুলো দিন দিন বেড়েই চলেছে। স্থানীয়রা জানান, অপরাধীরা অনেক সময় ধরা না পড়ায় আরও বেপরোয়া হয়ে উঠছে।
এদিকে এলাকার বাসিন্দারা বলছেন, চুরির এই প্রবণতা তাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রাকে ব্যাহত করছে। অনেকেই এখন রাতে বাড়ি ছেড়ে দূরে যেতে ভয় পাচ্ছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন বলেন, “আগে আমরা দরজা খুলে ঘুমাতাম। এখন রাতে পাহারাদার রাখতে হচ্ছে। কিন্তু এরপরও চুরি ঠেকানো যাচ্ছে না।”
অপরদিকে স্থানীয় নেতারা এবং সচেতন বাসিন্দারা মনে করেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি জনগণকেও সতর্ক থাকতে হবে। সন্দেহজনক ব্যক্তিদের কার্যকলাপ দ্রুত থানায় জানানোর আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
মেঘনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল জলিল বলেন, “সম্প্রতি চুরির ঘটনা নিয়ে আমরা বেশ সতর্ক। ইতিমধ্যে চুরির সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করতে কাজ শুরু হয়েছে। পুলিশের তৎপরতা আরও বাড়ানো হবে এবং জনগণের সহযোগিতায় এসব অপরাধ দমন করা সম্ভব।”
মেঘনার বাসিন্দারা আশা করছেন, পুলিশের সঠিক পদক্ষেপ এবং জনগণের সহযোগিতায় এই চুরির প্রকোপ কমবে। তারা চান, মেঘনা আবার শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদ এলাকায় পরিণত হবে।
উপজেলায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সক্রিয় তৎপরতার পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন সবাই।