ক্যান্সারে আক্রান্ত বাবার চিকিৎসার জন্য সোমবার ২০ হাজার টাকা পাঠায় মালয়েশিয়া প্রবাসী সাইফুল। পরদিন মঙ্গলবার সকাল ৮টায় বাবাকে শান্তনা দিয়ে বুধবার আরো ১০ হাজার টাকা পাঠানোর আশ্বাস দেন। মোবাইল ফোনে কথপোকথনের এক পর্যায়ে আগামী রমজানে বাড়ি আসলে ঈদের পরই ছেলেকে বিয়ে করাবেন বলেছিলেন বাবা। এটাই ছিল ছেলের সাথে বাবার শেষ কথা। ফোনে কথাবলা শেষে কর্মস্থলে যান সাইফুল। ওইদিন রাত ৮টায় মালয়েশিয়া থেকে ফোনে সংবাদ আসে সকাল অনুমান ১০টায় সাইফুল কর্মস্থলে ভবন ধ্বসে মারা গেছে সাইফুল।
ঘটনাটি ঘটে গত ২৮ নভেম্বর মঙ্গলবার সকালে মালয়েশিয়ার পেনাং শহরে। নিহত সাইফুল ইসলাম (২৪) কুমিল্লা দেবীদ্বার উপজেলার লক্ষীপুর গ্রামের দক্ষিণ পাড়ার বজলুর রহমানের বাড়ির রোশন আলী ভান্ডারীর পুত্র। সাইফুল পরিবারের অভাব ঘুচতে ২০১৮সালে মালয়েশিয়ায় গিয়েছিলেন। সেখানে তিনি নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করতেন। পুত্রের মরদেহ দ্রুত দেশে আনতে সরকারের নিকট দাবী করেছেন নিহত সাইফুলের পরিবার।
ওইদিন একইসাথে ভবন ধ্বসে নিহত তিন বাংলাদেশী নির্মাণ শ্রমিকের একজন হলেন কুমিল্লার দেবীদ্বারের সাইফুল ইসলাম। ওই দূর্ঘটনায় আরো ৪ নির্মাণ শ্রমিক নিখোঁজ রয়েছেন। পরিবারের ২ ভাই ও ৫ বোনের মধ্যে সাইফুল পঞ্চম। ছেলের মর্মান্তিক মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না বাবা-মা সহ পরিবারের কেউই। তাদের আহাজারি- আর্তনাদে অশ্রুসংবরণ করতে পারছেনা মৃত্যু সংবাদ পেয়ে আসা প্রতিবেশীরাও।
নিহতের মা আর্তনাদ করে জানান, দুই পুত্রই প্রবাসে থাকে। বড় ছেলে স্বপন(৩০) দুবাই থাকে প্রায় ৭/৮ বছর এবং ছোট ছেলে সাইফুল ইসলাম(২৪) ৫ বছর আগে মালয়েশিয়া গিয়েছিল। তাঁরা তাঁদের কষ্টের উপার্জিত টাকা পাঠিয়ে আমাদের আনন্দে রেখেছিল। প্রবাস থেকে প্রথমবারের মতো আগামী রমজানে ছুটিতে আসার কথা ছিল আমার ছোট সোনার। ঈদের পর সাইফুলকে বিয়ে করাতে পাত্রিও খুঁজে রেখেছিলাম। আমার মানিক আজ আর নেই। আমার মানিককে শেষ বারের মতো দেখতে চাই।