কুমিল্লার দেবীদ্বারে পারিবারিক বিরোধ নিষ্পত্তিতে ডাকা সালিসি বৈঠকে শামিম (৫০) নামে এক স্থানীয় চা’ দোকানদারকে চেয়ার দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটে শুক্রবার (১২ এপ্রিল) দিবাগত রাত ৯টায় দেবীদ্বার উপজেলার ১০ নং গুনাইঘর ইউনিয়নের উজানীকান্দি গ্রামের শামিম মিয়ার বাড়িতে।
সাবেক ইউপি মেম্বার সফিকুল ইসলাম, সালিসদার জুয়েল মিয়া ও স্থানীয়রা জানান, নিহত শামিম ও তার স্ত্রী মোরশেদা বেগমের সাথে তার চাচাতো ভাই মৃত: রফিকুল ইসলামের স্ত্রী বিধবা রীনা আক্তার (৩২) ও তার মেয়ে দশম শ্রেণীতে পড়ুয়া মেয়ের সাথে পারিবারিক বিরোধ নিয়ে একাধিকবার কথা কাটাকাটি হয়। রীনা আক্তারের সাথে শাহজাহানের ছেলে মিজানের পরকীয়া এবং বখাটেদের উত্তক্তের বিষয়ে একাধিক সালিস হয়। সর্বশেষ এসব বিষয় নিয়ে গত ৫ এপ্রিল দুই পরিবারের মধ্যে ঝগড়া হয়। ঝগড়া টিতে বাড়ির লোকজন দুই পরিবারকে এক সপ্তাহের সময় দেন। মিল না হওয়ায় শুক্রবার (১৩ এপ্রিল) রাত ৯টায় বিরোধপূর্ণ বাড়িতে সালিস ডাকা হয়। সালিসে উভয় পক্ষের স্বাক্ষ্য গ্রহনের এক পর্যায়ে পার্শ্ববর্তী উজানীজোড়া খন্দকার বাড়ির মোসলেম খন্দকারের ছেলে আব্দুল আলিম খন্দকার ২টি প্লাষ্টিক চেয়ার এবং ১টি কাঠের চেয়ার দিয়ে শামিমকে পিটিয়ে মারাত্মক আহত করে। তাকে দ্রুত দেবীদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনার পর আশংকাজনক অবস্থায় কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করেন। আজ(১৩ এপ্রিল) শনিবার বিকেল পৌনে ৪টায় টায় কুমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শামিমের মৃত্যু হয়। নিহত শামিম উজানীকান্দি গ্রামের মৃতঃ আব্দুল খালেকের পুত্র, সে বাড়ির পাশে চা’ দোকানের ব্যবসা করে আসছিলেন।
নিহত শামিমের স্ত্রী মোরশেদা বেগম জানান, তার স্বামীর বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ এনে তাকে সালিসি বৈঠকে নিছক কথা কাটাকাটিতে আলীম চেয়ার দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে। তিনি আরো জানান, তার চাচাতো ননদ ওই বিধবা মহিলার একাধিক ছেলের সাথে পরকীয়া সম্পর্ক এবং বখাটে ছেলেদের উত্তক্তের অভিযোগে একাধিক সালিস- বিচার হয়েছে। আমার স্বামী চা দোকানদার, এখানে নানা বিষয়ে নানা কথা হতে পারে, তার দায়ভার আমার স্বামীর উপর বর্তায়ে তাকে হত্যা করেছে। বড় ছেলে মিশন (২০), প্রবাসে, ছোট ছেলে ফাহিম (১৭) এবং মেয়ে সুমা (৯) লেখাপড়া করে। আমি আমার স্বামীর হত্যাকারীর ফাঁসী চাই।
এ বিষয়ে দেবীদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নয়ন মিয়া জানান, ইভটিজিং এর ঘটনায় গত রাতে স্থানীয়দের উদ্যোগে সালিসি বৈঠক বসে। বৈঠকে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে শামিম যখন বলে উঠে রীনার মেয়ে সোমা তার নিজের মেয়ে তখন আব্দুল আলিম খন্দকার তার চেয়ার দিয়ে কয়েকটি আঘাত করলে সে আহত হয়, পরে তাকে কুমেক হাসপাতালে নিয়ে গেলে পৌনে ৪টার দিকে সে মারা যায়। এ ব্যপারে এখনো কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি, অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেব।