কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার ধামতী গ্রামে জুয়া খেলাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনার মিমাংসায় ডাকা সালিসে পুনরায় দু’পক্ষের সংঘর্ষ হয়। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছে। হামলা চলাকালে দোকানপাটে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে।
শুক্রবার (৪ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১১ টা থেকে দুপুর ১ টা পর্যন্ত, ধামতী গ্রামের দক্ষিণখার এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। সংবাদ পেয়ে দেবীদ্বার থানা থেকে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে যেয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন। আহতদের দেবীদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়।
স্থানীয়রা জানান, প্রায় এক মাস পূর্বে ধামতী গ্রামের মৃত: আব্দুল বারেক’র ছেলে মো. হবি(২৪) দুয়ারিয়া গ্রামে জুয়া খেলার সময় স্থানীয়রা তাকে মারধর করে। ধামতী গ্রামবাসী জুয়া খেলার অপরাধে হবির বিরুদ্ধে গ্রাম্য সালিস ডাকা হয়। ওই সালিসে হবিকে মারধর করে আর ভবিষ্যতে মাদক সেবন ও জুয়া খেলা থেকে বিরত থাকার রায় দেন বিচারক মো. সফিকুল ইসলাম ও সাবেক ইউপি মেম্বার দুলাল মিয়া, শাহজাহান কবিরসহ গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
ওই রায়ের বিরুদ্ধে অভিযুক্ত হবির বাড়ির লোকজন দুয়ারিয়া গ্রামের জুয়ারীদেরও বিচার দাবী করেন। তখন সালিসদাররা বলেন, দুয়ারীয়া গ্রামের জুয়ারীদের বিচার আমরা করতে পারবনা, ওই গ্রামের লোকজনই তাদের বিচার করবে। এনিয়ে হবির পক্ষে কোরেরপাড় এলাকার লোকজন ও লতিফের বাড়ির লোকদের মধ্যে বাকবিতন্ডা ও হাতাহাতি হয়। ওই ঘটনায় দুই বাড়ির লোকদের মধ্যে গত একমাস ধরে বিরোধ চলে আসছিল। এক পক্ষ অপর পক্ষকে পেলেই মারধর করে আসছে।
কোরের পাড় ও লতিফের বাড়ির বিরোধ নিষ্পত্তিতে আজ সালিস হওয়া কথা থাকলেও সালিস বসার পূর্বেই দু’পক্ষের লোকদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, মারধর ও দোকানপাঠ ভাংচুর লুটপাট করা হয়। এতে অন্তত: উভয় পক্ষের অর্ধশতাধিক গ্রামবাসী আহত হন। পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্তনে আনেন।
আহতরা হলেন, ধামতী গ্রামের কোরেরপাড় এলাকার মো. ইউনুস(৫৪), গিয়াস উদ্দিন(২৮), মো. ইয়াছিন(২২), মো. গিয়াস উদ্দিন(৩২), মো. রাসেল(২৮), ফেরদৌসী বেগম(৩৩), শরীফ(২৮), হনুফা বেগম(২৫), আশরাফুল(২৮), মৌসুমী(২৫), ফাহিম(১৬)সহ ১১ জন এবং অপর পক্ষ আব্দুল লতিফের বাড়ির দিলু মিয়া(৫০), সোহেল রানা(২৫), ইসমাইল হোসেন(২২), সেলিম মিয়া(৩০), বিল্লাল হোসেন(৪০), মনির হোসেন(৪০), সাইদুল ইসলাম(২২), মিজানুর রহমান(৪০), সিরাজুল ইসলাম(৩৮), আবু তাহের (৪০)সহ ১০জনকে দেবীদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
এ ব্যপারে দেবীদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খালিদ সাইফুল্লাহ শুক্রবার বিকেলে জানান, সংঘর্ষের ঘটনার সংবাদে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এ ঘটনায় কোন পক্ষই এখনো থানায় মামলা করেনি।