কুমিল্লার দেবীদ্বারে গ্রাহকদের প্রায় ২০ কোটি আত্মসাৎ করে ব্রিকফিল্ড বিক্রির পায়তারা করছে ব্রিকফিল্ডের মালিক মনির হোসেন। পাওনা টাকা পরিশোধের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে ভুক্তভোগী গ্রাহকরা।
রবিবার (১ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টায় উপজেলার জাফরগঞ্জ ইউনিয়নের পিরোজপুর ব্রাদার্স ব্রিকফিল্ডের সামনে এবং কুমিল্লা সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে চরবাকর এলাকায় মনির ব্রিকফিল্ডের সামনে দুই দফায় ওই মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে ভুক্তভোগীরা। মানববন্ধনে ব্রাদার্স ব্রিকফিল্ডের ম্যানেজার আবুল খায়ের গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা আদায় এবং ব্রিকফিল্ড বিক্রির কথা চলছে বলে জানান। তবে এ টাকা মালিকপক্ষ কিভাবে খরচ করেছেন তিনি তা বলতে পারেননি।
এসময় ভুক্তভোগী গ্রাহকরা অভিযোগ করে বলেন, উপজেলার হোসেনপুর, পিরোজপুর, চন্দ্রনগর, চরবাকর, এবং বারুরসহ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের তিন শতাধিক লোকের কাছ থেকে মনির এবং ব্রাদার্স ব্রিকফিল্ডের মালিক মনির হোসেন ও তার ভাই জাকির হোসেন স্বপন ব্রিকফিল্ডের রশিদের মাধ্যমে বিভিন্ন গ্রাহকের কাছ থেকে নেয়া প্রায় ২০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে নেয়। গত মে মাসের প্রথম সপ্তাহে ৮নং জাফরগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহিদুল আলম ও ৩নং ওয়ার্ডের মেম্বার ইদ্রিস মিয়াসহ ভোক্তোভুগী পাওনাদারদের উপস্থিতিতে ৩০ আগস্টের মধ্যে পাওনা টাকা পরিশোধের কথা দিলেও টাকা পরিশোধ না করে ব্রিকফিল বিক্রির করার পাঁয়তারা করছে। তারা আরো বলেন, আমরা আমাদের জীবনের সর্বস্ব এই ব্রিকফিল্ডগুলোতে জমা রেখেছি আমরা এখন সর্বস্ব হারাতে বসেছি। ব্রিকফিল্ড মালিক মনির হোসেন এই টাকা সড়িয়ে নিয়ে কয়লার কারখানা ও বিভিন্ন যায়গায় সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। আমরা আমাদের টাকা ফেরত পেতে প্রশাসনের সহযোগিতা চাচ্ছি।
মানববন্ধনে উপস্থিত ভুক্তভোগী গ্রাহক গোলাম মোস্তফা বলেন, প্রবাস জীবনের সকল আয়ের ৪০ লক্ষ টাকা এই ইটভাটায় জমা রেখেছি। এই টাকা না পেলে আমি সর্বশান্ত হয়ে যাব। ভোক্তোভুগী রোকেয়া বেগম বলেন, আমার স্বামীর পেনশনের ৬ লক্ষ ৭০হাজার টাকা মনির হোসেনের ইটভাটায় দিয়েছি, তিনি এখন আমাদের টাকা না দিয়ে ইটভাটা বিক্রি করে ফেলছে। আরেক ভোক্তোভুগী মমতাজ বেগম বলেন, জীবনটাকে শেষ করে গরু পালন করি, গরু বিক্রির ৫ লক্ষ টাকা আমি মনির ইটভাটায় স্বপন মিয়ার কাছে জমা রেখেছি। এই টাকা না পেলে আমাদের স্বর্বশান্ত হয়ে পথে বসতে হবে।
এছাড়াও ব্রিকফিল্ডে টাকা রাখার রশিদ হাতে নিয়ে মানববন্ধনে উপস্থিত থেকে আরো বক্তব্য রাখেন, ভুক্তভোগী ইদ্রিস মেম্বার, ফারুক হোসেন, মোস্তফা মিয়া, শহিদুল্লাহ, বজলু মেম্বার, ইসমাইল হোসেন প্রমুখ। মানববন্ধন শেষে ভোক্তুভোগীরা পাওনা টাকা পরিশোধের দাবি জানিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিগার সুলতানার নিকট একটি স্বারকলিপি জমা দেওয়া হয়েছে বলে জানান।