সৌদী আরবে আকামা নিয়ে বিরোধের জের ধরে কুমিল্লার দেবীদ্বারে পূর্বপরিকল্পিতভাবে আনোয়ারা বেগম নামে এক গৃহবধূকে মারপিটসহ বালিশ দ্বারা চাঁপা দিয়ে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যার দায়ে আল-আমিন নামের এক যুবককে মৃত্যুদন্ড দিয়েছেন কুমিল্লার আদালত। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আল-আমিন কোর্টের জামিন নিয়ে পলাতক রয়েছে। তাছাড়া হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত প্রধান আসামি মোঃ মোস্তাফিজুর রহমানকে বিজ্ঞ আদালত বেকসুর খালাস প্রদান করায় রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে মামলার বাদী মোছাঃ উম্মে সালমা খাতুন।
বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় কুমিল্লার বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ চতুর্থ আদালতের বিচারক জাহাঙ্গীর হোসেন এ রায় দেন।
মামলার বিবরণে জানাযায়- নিহতের সৌদী প্রবাসী ছেলে ফেরদৌস প্রতিবেশী আব্দুস সামাদ ডাক্তারের ছেলে মারুফ হোসেনকে সৌদি আরবে নিয়ে যায়, সেখানে আকামা না পেয়ে মারুফের স্বজনরা পরষ্পর যোগসাজশে ২০১০ সালের ৩ মার্চ দিবাগত মধ্যরাতে আনোয়ারা বেগমকে মারপিটসহ বালিশ দ্বারা চাঁপাদিয়া শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করেন।
এ ব্যাপারে নিহতের মেয়ে কুমিল্লা দেবীদ্বার উপজেলার ভিংলা বাড়ী গ্রামের মৃত হাবিবুর রহমান’র কন্যা মোছাঃ উম্মে সালমা খাতুন (২২) বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামি করে পরদিন দেবীদ্বার থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক(এসআই) মোঃ আনোয়ার উল্লাহ তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে আসামি আল-আমিনকে গ্রেফতার করে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করেন। আদালতে অভিযুক্ত আল-আমিন হত্যাকান্ডে নিজেকে জড়িয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটন করে একই উপজেলার ভিংলা বাড়ী গ্রামের সুলতান আহমেদ’র ছেলে আসামী মোঃ নজরুল ইসলাম (৩৪), ডাঃ আঃ সামাদ’র ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান (২৬), মৃত সুজাত আলীর ছেলে সুলতান আহমেদ (৬০) ও সাজু মিয়ার ছেলে আল-আমিন (২০) এর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। স্বাক্ষ্য প্রমান ও শুনানী শেষে এবং আসামি আল-আমিন’র স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি পর্যালোচনাক্রমে আল-আমিন’র বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাঁকে মৃত্যুদন্ড; সেইসাথে ৫০ হাজার টাকা অর্থদন্ড এবং আসামি মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান এর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাঁকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন আদালত।
উল্লেখ যে, মামলা চলাকালীন সময়ে আসামি মোঃ নজরুল ইসলাম ও সুলতান আহমেদ মৃত্যুবরণ করায় তাদেরকে মামলার দায় হইতে অব্যাহতি প্রদান করেন আদালত।
এ রায়ে ঘটনার সাথে জড়িত প্রধান আসামি মোঃ মোস্তাফিজুর রহমানকে বিজ্ঞ আদালত বেকসুর খালাস প্রদান করায় রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে মামলার বাদী মোছাঃ উম্মে সালমা খাতুন হাউমাউ করে চিৎকার করে বলেন, রায়ের কপি হাতে পেলে শীঘ্রই উচ্চ আদালতে আপীল করবো।