দেবীদ্বারে কুমিল্লা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কে পাশে গাছের ডালে ফাঁসীতে ঝুলন্ত অজ্ঞাত হিন্দু ব্যক্তি(৫০)’র লাশ, বড়শালঘরে বসত ঘরের তীরের সাথে রশি দিয়ে ফাঁসীতে ঝুলন্ত তরুণীর লাশ এবং জাফরগন্জে কেরির টেবলেট সেবনে যুবকের আত্মহত্যাসহ ৩টি লাশ উদ্ধার করেছে দেবীদ্বার থানা পুলিশ।
ঘটনাগুলো ঘটে মঙ্গলবার দিবাগত রাত ৮টা থেকে বুধবার ভোর ৬টার মধ্যে। ১০ ঘন্টার ব্যবধানে ৩ জনের আত্মহত্যার ঘটনার কারন জানতে পারেনি পুলিশ ও স্বজনরা। তবে তারা জানান মানষিক ভারসাম্যহীনতার কারনেই তারা আত্মহত্যা করেছে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার জাফরগঞ্জ ইউনিয়নের বারুর গ্রামের ইসমাইল হোসেনের পুত্র, রাজমিস্ত্রী হাবিবুর রহমান(২৫) মঙ্গলবার রাত ৮ টায় পারিবারিক এবং মানুষিক সমস্যায় কেরির টেবলেট খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে, এ সময় মারাত্মক অসুস্থ্য হয়ে পড়লে তাকে দ্রুত কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (কুমেক) নেয়ার পথে তিনি মারা যান।
এদিকে বুধবার ভোরে পথচারিরা কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের পাশে গাছের ডালে ফাঁসীতে ঝুলন্ত লাশ দেখে পুলিশকে খবর দেয়। ঘটনাটি ঘটে বুধবার (৪ অক্টোবর) ভোরে কুমিল্লা- সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের দেবীদ্বার উপজেলার সিএন্ডবি ষ্ট্যাশনের অদুরে গোপালনগর সড়কের পাশে। উপস্থিত শত শত লোকজনের কেউ তার পরিচয় দিতে পারেননি। তবে তাদের কেউ কেউ ধারনা করছেন, কোন বিরোধের ঘটনায় প্রতিপক্ষ তাকে হত্যাপূর্বক এ নির্জণ এলাকায় গাছের ডালে ঝুলিয়ে রেখে গেছে। দেবীদ্বার থানা পুলিশ বলছেন, পারিবারিক বা সামাজিক তিক্ত ঘটনায় ক্ষোভ থেকে এ এলাকায় এসে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করতে পারে।
নিহত ব্যক্তির পরনে হাতা কাটা জলপাই রং এর শার্ট এবং চেক লুঙ্গী পড়া ছিল। মরদেহের অন্তত: ১০ ফুট দূরে একজোড়া বার্মিজ সেন্ডেল পড়ে ছিল। ফাঁসিতে ঝুলন্ত মরদেহটি মাটি থেকে প্রায় ৩ ফুট উপরে ছিল। লম্বায় প্রায় সাড়ে ৫ ফুট হবে। মুখে হালকা দাড়ি ও মাথার কিছু চুল পাকা ছিল। পুলিশের ছোরতহাল রিপোর্টে অজ্ঞাত এই ব্যক্তি হিন্দু সম্প্রদায়ের বলে সনাক্ত করেছেন।
তৃতীয় ঘটনাটি ঘটে বুধবার (৪ অক্টোবর) ভোর অনুমান ৬টায় উপজেলার বড়শালঘর গ্রামের বাগান পাড়া খলিলুর রহমানের বাড়িতে। ওই বাড়ির খলিলুর রহমানের কণ্যা তামান্না আক্তার(২১) ঘরের তীরের সাথে রশি পেচিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। তামান্না স্থানীয় মাদ্রাসা থেকে দাখিল পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়ে একটি হাফেজিয়া মাদ্রাসায় ভর্তি হয়ে লেখা পড়ার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট পড়াতেন। পুলিশ ধারনা করছেন পারিবারিক বা প্রেমের ঘটনায় ডিপ্রেশন থেকে আত্মহত্যা করতে পারে।
দেবীদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ কমলকৃষ্ণ ধর জানান, দু’জন ফাঁসী এবং একজন কেরির টেবলেট খেয়ে তিন জনই আত্মহত্যা করেছে। তাদের ছোরতহাল রিপোর্ট তৈরী ও থানায় অপমৃত্যু মামলা দায়ের পূর্বক ৩ জনের মরদেহ আজ দুপুরে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করা হয়েছে। ময়না তদন্তের রিপোর্ট আসার পরই বলা যাবে আত্মহত্যা না হত্যা।