গত দুইদিন আগেও দেয়ালটিতে চোখ পড়লে ফিরিয়ে নিতেন পথচারীরা। কারণ আস্তর খসে পড়া দেয়ালের ফাঁকা জায়গা জুড়ে ছিল নেতাদের পোস্টার ফেস্টুন।
এখন এ দেয়ালটি দেখতে অনেকেই ছুটে আসছেন। তুলছেন ছবি। প্রশংসা সবার মুখে মুখে। আঁকিয়ে সম্পর্কে জানতে চাইছেন অনেকে।
দেয়ালে আঁকা হয়েছে ছবি। যে ছবি ও লেখা দেশ সংস্কারের বার্তা বহন করে। দেয়ালে ফুটে উঠেছে শহীদ মিনারের ছবি উথিত সূর্য ও বিপ্লবের প্রতিচ্ছবি। দেয়ালে চোখ পড়লেই চেতনা ভেসে আছে মগজে মননে। সূর্যোদয়ের ছবি এ যেন নতুন কিছুর আহবান। যেন নতুন করে দেশ গড়ার স্বপ্ন। কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলা কমপ্লেক্সের বাউন্ডারি ওয়াল জুড়ে আঁকা হয়েছে এ ছবি। এই উপজেলার তারুণ্য মঙ্গলবার ভর দুপুর থেকে ঝুঁকেছে দেয়ালে আঁকার দিকে।
সকাল থেকে দেয়াল পরিষ্কার করে রং তুলিতে বিপ্লবের চিত্র তুল ধরছে তারা। সরকার পতন আন্দোলনের আগের লেখাগুলো মুছে দিয়ে তারা দেয়ালে আঁকছেন নানা ধরনের ছবি। লিখছেন অনেক সুন্দর সুন্দর বাণী। কলেজ হাই স্কুলসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী উপজেলা সদরে এ কাজ করছেন।
বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীর সাথে কথা হলে তারা জানায়, আন্দোলনে জয়ী হওয়ার পর আমাদের দায়িত্ব আরো বেড়ে গেছে। আমরা রাস্তা পরিষ্কার ট্রাফিকের কাজ ও দেয়াল লিখনীতেই খ্যান্ত হবো না। আমরা চাই আগামী প্রজন্মের একটি বাসযোগ্য বাংলাদেশ। তাই দেশ সংস্কারেও আমরা প্রত্যয়ই।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মুরাদনগর উপজেলা কমপ্লেক্সের বিশাল বাউন্ডারি দেয়ালে ছবি আঁকা অব্যাহত রয়েছে। আঁকার ধরন দেখে বোঝা যায় আঁকা আঁকিতে প্রশিক্ষিত নন তারা। মনের জোরে আঁকছেন তারা। সাধারণ মানুষ তাদের আঁকা দেখতে ভিড় জমাচ্ছে। চলার পথে গাড়ি থেকে অনেকেই মোবাইল বের করে ভিডিও ও ছবি তুলছেন।
কারণ কাঁচা হাতের অঙ্কনে পাকা বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ের কথা লেখা আছে। তুলে ধরা হয়েছে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের বিভিন্ন চিত্র। আবু সাইদের ছবিও স্থান পেয়েছে দেয়ালে।
আব্দুল্লাহ নামের একজন পথচারী বলেন, দেয়ালে আঁকা প্রত্যেকটা ছবি আমার কাছে ভালো লেগেছে। বাড়িতে পঞ্চম শ্রেণীতে পড়া আমার একটা ছেলে আছে, তাকে এগুলো দেখাবো বলে সবগুলোর ছবি তুলেছি।