কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ায় কয়েক দিনের তাপদাহে কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ায় বেড়েছে রোগব্যাধি। এতে ডায়রিয়া, বমি, জ্বর, গলাব্যথাসহ নানা উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হচ্ছেন নানা বয়েসী মানুষ। শিশু ও বৃদ্ধদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে বলে তারা এসব রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকরা বলছেন, গরম বৃদ্ধি পাওয়ায় নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন মানুষ।
চিকিৎসকরা জানান, গরমের এ সময়টাতে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে। খাদ্য তালিকায় থাকা চাই সুষম খাবারসহ পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন ‘সি’ জাতীয় খাবার ও রসালো ফল। এ সময় সুস্থ থাকতে খেতে হবে মৌসুমি ফল, শাকসবজি ও প্রচুর পরিমাণে পানি। এতে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। সরেজমিনে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহির্বিভাগ ও জরুরি বিভাগসহ বেসরকারি হাসপাতাল এবং রোগ নিরাময় কেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে, কয়েক দিনের হঠাৎ গরমে নানা রোগ নিয়ে চিকিৎসা নিতে আসছেন নানা বয়সী মানুষ। এসব রোগের মধ্যে রয়েছে ডায়রিয়া, পানিশূন্যতা, জ্বর, ঠান্ডা, কাশি, নিউমোনিয়া, বমি, পেটব্যথা, গলাব্যথা ও এলার্জিজনিত সমস্যাসহ নানা ধরণের রোগ। অধিকাংশ রোগীকেই চিকিৎসা দিয়ে বাড়ি পাঠানো হচ্ছে। খুব কমসংখ্যক রোগীকে হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তিকৃত রোগী চান্দলা ইউনিয়নের বড়ধুশিয়া এলাকার সিরাজুল ইসলাম বলেন, গরমে জমিতে ধান কাটার সময় বমি শুরু হয়, সঙ্গে পেটব্যথা। পরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে ভর্তি হই। এখন আমি ভালো আছি।
চিকিৎসা নিতে আসা উপজেলার শিদলাই ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের আবুল কালাম বলেন, আমার ৭ বছরের শিশু সাইদ গত কয়দিন ধরে পাতলা পায়খানাজনিত সমস্যায় ভুগছিল। বাড়ির পাশের ঔষধ দোকান থেকে ঔষধ নিয়ে খাইয়েছিলাম। তেমন কোনো উন্নতি না দেখে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এসেছি।
দুই বছর বয়সী নাফিসার বাড়ি উপজেলার ছাতিয়ানী এলাকায়। শিশুটির মা রহিমা আক্তার জানান, নাফিসার গত কয়েক দিন ধরে হালকা জ্বর ছিল। এরইমধ্যে তার ডায়রিয়া দেখা দিয়েছে। এ জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এসেছি।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবু হাসনাত মো. মহিউদ্দিন মুবিন বলেন, এই গরমে অতিরিক্ত ঘামের কারণে শিশু ও বয়স্কদের পাশাপাশি সকল বয়সী মানুষের ঠাণ্ডা, সর্দি-কাশি, জ্বর হতে পারে। এ ছাড়া পেট খারাপ, কলেরা, আমাশয়, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া হওয়ার আশঙ্কা থাকে। অনেক সময় অতিরিক্ত গরমের তীব্রতায় হিটস্ট্রোক হতে পারে। এক্ষেত্রে একটু পর পর পানি ও ওরস্যালাইন খাওয়া পরামর্শ দেন। প্রস্রাবের রঙ ও পরিমাণের দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। প্রস্রাবের রঙ বদলের পাশাপাশি পরিমাণ কমে গেলে পানিসহ তরলজাতীয় খাবারের পরিমাণ বাড়াতে হবে। এসময় টাইট জামাকাপড় না পরে ঢিলেঢালা সুতি জামাকাপড় পরার পরামর্শ দেন এবং মাঠে ছাতা নিয়ে বের হওয়ার জন্য পরামর্শ দেন।
এছাড়া তিনি আরও বলেন, শরীর অবসন্ন লাগে, মাথা ঝিমঝিম করে, বমি-বমি ভাব লাগে ও বমিও হতে পারে, চোখে আবছা দেখে, মাথা ঘুরতে থাকা, অসংলগ্ন কথা-বার্তাও বলা এমন পরিস্থিতে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া পরামর্শ দেন। তিনি বলেন ব্যক্তিগত সচেতনতাই সবাইকে সুস্থ রাখতে পারবে।