হোমনায় নিখোঁজের তিন দিন পর মো. সজিব (১৩) নামের এক মাদ্রাসা ছাত্রের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ সোমবার বেলা ১০টার দিকে উপজেলার ঘাগুটিয়া ইউনিয়নের আলীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন জলাশয়ের কচুরিপানার নিচ থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সে আলীপুর ক্বাদেরিয়া হাফেজিয়া সুন্নী মাদ্রাসার নূরানী বিভাগের ছাত্র ছিল। নিহত সজিব আছাদপুর ইউনিয়নের ঘনিয়ারচর গ্রামের মো. গোলাম মোস্তফার ছেলে। এ ঘটনায় মাদ্রাসার মোহতামি মো. ইয়াছিন ও শিক্ষক রুবেলকে আটক করে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ।
নিহতের মা পারুল আক্তার জানান, গত শুক্রবার সন্ধ্যায় তিনি তার ছেলের সাথে কথা বলার জন্য মাদ্রাসার মোহতামি মো. ইয়াছিনের মোবাইলে ফোন করেন। তখন মোহতামিম ইয়াছিন বলেন সজিব এখন এখানে নাই, কাল শনিবার থেকে মাদ্রাসার ছুটি শুরু হবে। সকাল ছয়টায়-ই সজিবকে বাড়িতে পাবেন। পরে সকাল ছয়টা থেকে ১০টা পর্যন্ত ছেলের জন্য অপেক্ষা করে ছেলেকে না পেয়ে মোহতামিম ইয়াছিনের মোবাইলে ফোন করলে তিনি বলেন, সজিব তো বাড়িতে গেছে গা। এরপর আমি কান্নাকাটি করতে করতে দ্রুত মাদ্রাসায় এসে মোহতামিমকে বলি আমার ছেলেকে কি করছেন, তারাতারি আমার ছেলেরে আমার কাছে দেন। এরপর থেকে তিনি উল্টাপাল্টা কথা বলা শুরু করেন। পরে আমি থানায় মামলা করতে আসলে মোহতামি ইয়াছিন নিজেই থানায় এসে বাদী হয়ে সজিব নিখেঁাজ হয়েছে মর্মে থানায় অভিযোগ দেন। এরপর থেকে বার বার মোহতামিম ইয়াছিনের কাছে গেলে তিনি বলেন সজিব সোনারামপুর আছে, এইখানে আছে, সেই সেখানে আছে বলতে থাকেন। মোহতামিমের কথা মতো আমরা সব জায়গা খুঁজতে থাকি, যাইতে থাকি, কিন্তু কোথাও আমার ছেলেকে পাই না। পরে আজ সোমবার সকাল ১০টার দিকে আলীপুর গ্রামের লোকজন জলাশয়ে কচুরিপানার মধ্যে একটি লাশ ভাসতে দেখে পুলিশকে খবর দেয়। এরপর আমরা এসে দেখি আমার ছেলে সজিবের লাশ এটি। আমি আমার ছেলের বিচার চাই, যারা হেরে খুন করছে হেগ সবার ফাঁসি চাই। এদিকে ছেলে লাশ উদ্ধারের খবর পেয়ে বাবা গোলাম মোস্তফা অজ্ঞান হয়ে গেছে। দুই ভাই দুই বোনের মধ্যে সজিব সবার ছোট। হোমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো.জয়নাল আবেদিন বলেন, খবর পেয়ে জলাশয় থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মাদ্রাসার মোহতামি মো. ইয়াছিন ও সহকারি শিক্ষক রুবেলকে আটক করে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে মামলা প্রক্রিয়াধীন।
হোমনা সার্কেলের সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার মীর মহসিন মাসুদ রানা বলেন, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে মাদ্রাসা ছাত্রের মৃত্যুর রহস্য উদঘাটন করা হবে।