রোববার (২৯ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত ১২টার দিকে মাধাইয়া বাজার মসজিদের পাশের একটি মিষ্টির দোকান থেকে আগুনে সূত্রপাত ঘটে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে চান্দিনা, কুমিল্লা ও দাউদকান্দি ফায়ার সার্ভিসের ৬টি ইউনিটের যৌথ প্রচেষ্টায় প্রায় সাড়ে ৩ ঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। সোমবার সকালে ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করেছে উপজেলা নির্বাহী অফিসার, সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও থানার অফিসার ইনচার্জ।
মাধাইয়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি কে.এম জামাল বলেন- আগুনে পুড়ে যাওয়া দোকান গুলোর মধ্যে অর্পিতা ইলেকট্রনিক্স, লোপা এন্টারপ্রাইজ, ভাই ভাই ক্রোকারিজ, মান্নান ভেটেরিনারি, স্বপ্ন ষ্টোর, হাসিয়া ষ্টোর, এমরান ভেরাইটিজ ষ্টোর, বিসমিল্লাহ মেডিকেল হল, পায়ে পায়ে সুজ, কাপড়ের গোডাউন, সালাম মিষ্টি ভান্ডার, খালেক মিষ্টি ভান্ডার ও গোডাউন সহ অন্তত ১শতটির বেশি দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা প্রস্তুতের কাজ চলছে। তালিকা তৈরির পর ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বলা যাবে।
এদিকে সোমবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন ছিলো পুরো বাজার। সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদেরকে সরকারিভাবে আর্থিক সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজিয়া হোসেন।
স্থানীয়রা জানায়- রোববার রাত ১২টার দিকে হঠাৎ বাজারের একটি দোকানে আগুন দেখতে পান ব্যবসায়ীরা। কিছুক্ষণের মধ্যেই তা ছড়িয়ে পড়ে পুরো বাজারে। খবর পেয়ে চান্দিনা ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে কাজ শুরু করলেও, আগুন ছড়িয়ে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। এরপর পুড়ে ছাই হয়ে যায় একের পর এক দোকান। মুহুর্তের মধ্যেই আগুনের তীব্রতা ছড়িয়ে পড়লে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের যান চলাচলও সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যায়। স্থানীয়রা আরও জানান- মাধাইয়া এলাকায় পানির সংকট থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে কিছুটা সময় ব্যয় হয় ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের। ততক্ষণে পুড়ে ছাই হয়ে যায় ব্যবসায়ীদের সব কিছু।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স কুমিল্লার ভারপ্রাপ্ত সহকারী পরিচালক নিউটন দাস বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আগুনের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় দাউদকান্দি এবং কুমিল্লা ফায়ার স্টেশনের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে যুক্ত হন। প্রত্যেক স্টেশনের দুটি করে তিন স্টেশনের ছয়টি ইউনিট কাজ করে। সাড়ে ৩ ঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। একটি মিষ্টির দোকান থেকে আগুনের সূত্রপাত হয় এবং মুহূর্তের মধ্যে তা বাজারে ছড়িয়ে পড়ে। তবে কত লাখ বা কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা হিসাব না করা পর্যন্ত বলা যাচ্ছেনা।
এ ব্যাপারে চান্দিনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নাজিয়া হোসেন বলেন- এ অগ্নিকান্ডের সূত্রপাত কি থেকে হয়েছে তা এখনো নিশ্চিত বলা যাচ্ছে না। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পুড়ে যাওয়া ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বিষয়ে বাজার সেক্রেটারির সভাপতিকে বলা হয়েছে তালাকি তৈরি করে দেওয়ার জন্য। তবে অগ্নিকান্ডের ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদেরকে সরকারিভাবে আর্থিক সহযোগিতার ব্যবস্থা করার চেষ্টা চলছে। ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্য তিনি বলেছেন যাতে ভবিষ্যতে এধরনের ঘটনা আর না ঘটতে পারে সেদিকে ব্যবসায়ীদের কে আরও সতর্ক থাকতে হবে। প্রয়োজনে বাজার পাহাড়াদার আরও বাড়াতে হবে । অগ্নিকান্ডের সূত্রপাত কি থেকে তা ক্ষতিয়ে দেখা হবে বলেও জানান তিনি।