মাত্র ১২৮ দিনে পবিত্র কুরআন মুখস্থ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছে সাইফ মাহমুদ নামে নয় বছর বয়সি এক শিশু। সবাই তাকে এখন হাফেজ সাইফ বলেই ডাকেন।
সাইফ কুমিল্লা জেলার চান্দিনা উপজেলার সাতবাড়িয়ার মাদ্রাসা দারুল উলুম আল ইসলামিয়ার হিফজ বিভাগের শিক্ষার্থী। সে জেলার সদর দক্ষিণ উপজেলার কালিকাপুর গ্রামের প্রবাসী আব্দুল্লাহ মাহমুদের ছেলে।
মাত্র নয় বছর বয়সে চার মাস ৮ দিনে পবিত্র কুরআন শরীফ মুখস্থ করার এই কৃতিত্বে খুশি বাবা-মা, শিক্ষক ও স্বজনরা। তাদের আশা, সাইফ ইসলামি ব্যক্তিত্ব হয়ে দেশ ও মানুষের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করবে।
তার ওস্তাদ (শিক্ষক) হাফেজ মাসুদুর রহমান বলেন, এমন ছাত্র আমি এর আগে পাইনি। সে প্রতিদিন এসে জিজ্ঞেস করত কত পৃষ্ঠা পড়বে। আমি বলে দিতাম। একটা সময় বাড়াতে বাড়াতে ৮ পৃষ্ঠা পর্যন্ত পড়তে বলেছি সে তাও শেষ করতে সক্ষম হয়েছে। এমন অসাধারণ মেধাবী ছাত্র পেয়ে আমি খুবই আনন্দিত।
এ সময় হাফেজ মাসুদুর রহমান আরও বলেন, তার খেলাধুলা ও দুষ্টামিতে তেমন মন ছিল না। দুপুরে সব শিক্ষার্থী যখন ঘুমাত সেও ঘুমাত; কিন্তু সবার আড়ালে কখন সে ঘুম থেকে উঠে আবার পড়া শুরু করত তা বুঝতাম না। এভাবে সে অন্যসব ছাত্রের চেয়ে অনেক এগিয়ে যায়।
মাদ্রাসার মুহতামিম (প্রধান শিক্ষক) হাফেজ মাওলানা মুফতি এনামুল হক বলেন, প্রথমে যখন তাকে নিয়ে এসেছিল তার পরিবার আমি সোজা নিষেধ করেছি। কারণ এত ছোট বাচ্চা একা থাকা সম্ভব নয়। কিন্তু তখনই এই বাচ্চার আগ্রহ ছিল। সে ভর্তি হয়ে এখানে থাকবে বলে জানায়। এরপর আমিও সম্মতি দেই। সে তার গ্রুপের অন্য সবার চেয়ে ছোট। সাধারণত তিন বছর লাগে হাফেজ হতে। মেধাবী কিছু ছাত্র একবছর বা তার কম সময়ে শেষ করে ফেলে; কিন্তু হাফেজ সাইফ মাহমুদ মাত্র ১২৮ দিনে (৪ মাস ৮ দিন) হিফজুল কুরআন সম্পন্ন করেছে। তার মতো ছোট্ট একটি শিশু এত অল্প সময়ে কুরআনের হাফেজ হওয়ায় আমরা বিস্মিত ও উচ্ছ্বসিত। আমরা শুধু তার কৃতিত্বের জন্য আলাদা সংবর্ধনা অনুষ্ঠান করব। যাতে অন্য শিক্ষার্থীরা অনুপ্রাণিত হয়।
সাইফের বাবা আরব আমিরাত প্রবাসী আব্দুল্লাহ মাহমুদ বলেন, আমার এক ছেলে এক মেয়ে। সাইফ আমাদের বড় সন্তান। মাত্র নয় বছর বয়সে অল্প সময়ে পূর্ণ কুরআন মুখস্থের বিরল সৌভাগ্য অর্জন করেছে। এজন্য আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জানাই। আমি আবেগাপ্লুত। পাশাপাশি মাদ্রাসার কর্তৃপক্ষ এবং শিক্ষকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। সাইফ যেন ইসলাম সম্পর্কে জেনে আলোকিত মানুষ হতে পারে সেজন্য সবার কাছে দোয়া চাই।