আজ ৯ ডিসেম্বর কুমিল্লার দাউদকান্দি হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এ দিনে মুক্তি বাহিনীর আক্রমনে উপজেলার সদরের ডাকবংলোয় অবস্থিত ঘাঁটি ছেড়ে প্রান নিয়ে কোনো রকমে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয় দখলদার পাক বাহিনী। দাউদকান্দির মাটিতে বীর মুক্তিযোদ্ধারা উড়িয়ে দেয় লাল-সবুজ পতাকা।
ডিসেম্বরের শুরুতেই দেশের বিভিন্ন রণাঙ্গনে মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমনে কোনঠাসা হয়ে পড়ে পাক হানাদাররা। এরই ধারাবাহিকতায় দাউদকান্দির মুক্তিযোদ্ধারা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ইলিয়টগঞ্জ শহীদনগর ওয়্যারলেস কেন্দ্র এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগের দাউদকান্দি ডাকবাংলোয় পাকি সেনাদের টার্গেট করে চারদিক থেকে একযোগে আক্রমন করে। এদিন মোহাম্মদপুর, গোয়ালমারী, বাতাকান্দি থেকে মুক্তিযোদ্ধারা অগ্রসর হতে থাকে পাকিদের ক্যাম্প লক্ষ্য করে। একই সময় ভারতীয় মিত্রবাহিনীর কামানের গোলার আক্রমন। মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর দ্বিমুখী আক্রমনে বেশামাল হয়ে পড়ে পশ্চিম দিক দিয়ে পিছু হটে পাক হানাদার বাহিনী। মুক্তিবাহিনীর আক্রমনের তোড়ে পাক বাহিনী দাউদকান্দি সদরে পালাতে থাকে।
এ সময় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশ্ববর্তী গ্রামের মানুষ পাক সেনাদের প্রতিরোধ করে। এ অবস্থায় আতংকিত সেনারা অনেকেই গোমতী নদীতে লাফিয়ে পড়ে এবং লঞ্চে করে ঢাকা পালিয়ে যায়।
৮ ডিসেম্বর থেকে ৯ ডিসেম্বর একটানা যুদ্ধে পরাভূত পাক বাহিনী পিছু হটতে হটতে জমায়েত হয় দাউদকান্দির ডাকবাংলোয়। এখান থেকেই লঞ্চযোগে মেঘনা-গোমতী নদী পেরিয়ে গজারিয়া হয়ে ঢাকা পালিয়ে যায় পরাজিত পাকহানাদার। ৯ ডিসেম্বর শক্রমুক্ত হয় দাউদকান্দি।