আজ শনিবার দুপুরে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে উপজেলা পরিষদ কর্তৃক আয়োজিত বিদায়ী সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত হন ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইউএনও সোহেল রানা। এসময় তাাঁকে ও তার সহধর্মিণী উপজেলা লেডিস্ ক্লাবের সভাপতি ফাহিমা নাসরিনকে উপজেলা পরিষদ সহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে ক্রেস্ট ও সম্মাননা প্রদান করা হয়।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মুহাম্মদ আবু জাহেরের সভাপতিত্বে ও ব্রাহ্মণপাড়া সদর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জহিরুল হকের সঞ্চালনায় বিদায়ী সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ কাউছার হামিদ, সাহেবাবাদ ইউপি চেয়ারম্যান মনির হোসেন চৌধুরী, দুলালপুর ইউপি চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান রিপন ভূইয়া, মালাপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান শেখ আব্দুল্লাহ আল মামুন, শশীদল ইউপি চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান রিয়াদ, উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ও শিদলাই ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম আলাউল আকবর, চান্দলা ইউপি চেয়ারম্যান ওমর ফারুক উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এনামুল হক, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শহীদুল করিম, সমবায় কর্মকর্তা উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা কবির আহমেদ, উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম বাবুল, সদস্য শিরিন সুলতানা, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা যুবলীগের সদস্য জাহিদুল হাসান পলাশ, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি নাজমুল হাসান শরিফ, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন মিশন, সাহেবাবাদ ইউপি সদস্য জাকির হোসেন, সাহেবাবাদ ডিগ্রি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোশারফ হোসেন আলিফ।
এছাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মাহবুবুল হাসান, প্রকৌশলী আব্দুর রহিম, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শহীদুল করিম, পল্লী বিদ্যুতের এজিএম আজহারুল ইসলাম আবীর, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা লুৎফা ইয়াসমিন, ইউআরসি ইনস্ট্রাক্টর হাজেরা খাতুন, আনসার বিডিপি কর্মকর্তা নিলুফার ইয়াসমিন, যুবলীগ নেতা কামাল হোসেন, গোলাম কিবরিয়া পারভেজ, উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শরিফুল ইসলাম, সহসভাপতি এইচ এম সাকিব, ফারুকুল ইসলাম মাসুক, সোলেমান মিয়া, আব্দুল্লাহ আল নোমান, রবিউল ইসলাম রবি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক যুবরাজ আল নূর দুর্জয়, সাংগঠনিক সম্পাদক বাহারুল ইসলাম, শামসুদ্দোহা বারী প্রমূখসহ বিভিন্ন ইউপি সদস্য ও বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
ইউনিয়ন চেয়ারম্যানদের পক্ষ থেকে বিশেষ সম্মাননা প্রদান
উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের সংগঠনের পক্ষ থেকে বিদায়ী ইউএনও সোহেল রানাকে বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হয়। স্মৃতি রোমন্থন করতে গিয়ে অনেকে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। এ সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন কেউ কেউ।
সাহেবাবাদ ইউপি চেয়ারম্যান মনির হোসেন চৌধুরী বলেন, উপজেলা সৃষ্টির পর থেকে ব্রাহ্মনপাড়া অন্ধকারাচ্ছন্ন ও পশ্চাৎপদ একটি জনপদ ছিল। আমি-আমরা সেই অন্ধকারেরই পথিক ছিলাম। আজ আমরা আলোর পথযাত্রী। বিদায়ী ইউএনও সোহেল রানা স্যার আমাদের যে আলোর পথ দেখিয়েছেন তা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে৷ তিনি তাঁর দায়িত্বকালীন সবাইকে সমান চোখে দেখেছেন। গত ইউপি নির্বাচনে আট ইউনিয়নের মধ্যে সাতটিতে নতুন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছি। আমাদের জনপ্রতিনিধি হওয়ার কথা ছিল যুগের বেশি সময় আগে৷ কিন্তু আশুভ শক্তির কারণে সেটি হয়ে ওঠেনি। সকল ভয় ভীতির উর্ধে থেকে তিনি একটি সুষ্ঠু ভোটের আয়োজন করে জনগণের হাতে প্রতিনিধি নির্বাচনের যে ক্ষমতা তুলে দিয়ে গেছেন তা ইতিহাস হয়ে থাকবে।
মালাপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান শেখ আব্দুল্লাহ আল মামুন নির্বাচনের স্মৃতি রোমন্থন করতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি বলেন, “আমি ভিন্ন দল ও মতাদর্শের হওয়ার হওয়ার কারণে নির্বাচন ও নির্বাচন পরবর্তী অনেক ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছি। এতে আমি একেবারে ভেঙে পড়ি। ইউএনও সোহেল রানা স্যার যদি না থাকতেন তাহলে চক্রান্তকারীরা আমাকে প্রথমতঃ নির্বাচিত হতে দিতোনা। আর নির্বাচিত হলেও চক্রান্ত করে আমাকে পদচ্যুত করা হতো। কিন্তু ইউএনও স্যার আমার প্রতি অবিচার হতে দেননি। আর তাইতো আমরা ৮ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা এক হয়ে জনগনের সেবা করার সাহস পেয়েছি”।
ব্রাহ্মণপাড়া সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জহিরুল হক বলেন, জনতার সেবক হয়েও আমরা জনসেবায় তার কাছে পরাভূত হয়েছি। সামাজিক নিরাপত্তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছি, কিন্তু জনগণের নিরাপত্তা দেওয়ার ক্ষেত্রে আমরা তার সমকক্ষ হতে পারিনি। তাঁর অনুসারী হতে পেরেই নিজেকে ধন্য মনে করেছি।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ কাউছার হামিদ বলেন, “উপজেলার সর্বস্তরের মানুষ একজন সরকারি কর্মকর্তাকে ১৫ দিন ধরে বিদায় সংবর্ধনা জানাচ্ছে এটি সচরাচর দেখা যায়না। কিন্তু ব্রাহ্মণপাড়ার সুযোগ্য ইউএনও স্যারের ক্ষেত্রে এটি ঘটেছে। এর পেছনে রয়েছে ইউএনও স্যারের জনসম্পৃক্ততা। তিনি উপজেলার সর্বস্তরের মানুষের জন্য তিনি নিজেকে আত্মনিয়োগ করেছিলেন জন্যই এটি সম্ভব হয়েছে। বিনিময় প্রত্যাশা না করে তিনি যেভাবে মানুষের কল্যাণে কাজ করেছেন, সেজন্য ব্রাহ্মণপাড়াবাসী নিজেদের ভাগ্যবান মনে করতে পারেন। সেই সঙ্গে আমি নিজেকেও ভাগ্যবান মনে করি কারণ এরকম একজন ডাইনামিক উপজেলা নির্বাহী অফিসারের অধীনে কাজ করার সুযোগ পেয়েছি। জ্ঞান, সততা, দক্ষতা ও নেতৃত্ব গুণে তিনি ছিলেন অনন্য । আমি তাঁর কাছ থেকে যা শিখেছি তা আমার জীবনের পাথেয় হয়ে থাকবে। চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় তিনি যে দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন তা অনুকরণীয়। তিনি রুটিন কাজের বাইরে যেভাবে নিজেকে আত্মনিয়োগ করেছেন সেটি তাকে অনন্য করেছে”৷
উপজেলা চেয়ারম্যান ও অনুষ্ঠানের সভাপতি আলহাজ্ব আবু জাহের বলেন, “এমন একজন উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছি যিনি চ্যালেঞ্জ নিতে ভালোবাসেন। জানসেবা ও ন্যায়বিচার একটি কঠিন চ্যালেঞ্জিং বিষয়। একজন সৎ ও সাহসী উপজেলা নির্বাহী অফিসার থাকায় উপজেলা পরিষদের পক্ষে সেটি অনেকটাই সহজ হয়েছে৷ উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে আমি ব্রাহ্মণপাড়াবাসীর পক্ষ থেকে বিদায়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসাররে কৃতজ্ঞতা ও শুভ কামনা জানাই”।
আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় এবং গোমতী ও সালদানদী ভাঙা পড়ে ভয়াবহ বন্যা হয়ে ব্রাহ্মণপাড়ায়। ক্ষতি সম্মুখে পড়ে এলাকার কৃষকরা। এছাড়া...
Read more