কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ায় গত চার বছর পূর্বে পাহাড়িঢলে ভেঙে পড়া সেতুটির হয়নি সংস্কার কাজ।ভাঙা অংশে স্থানীয়দের উদ্যোগে বাঁশ দিয়ে তৈরি করা সাঁকো দিয়েই হচ্ছেন পারাপার ওই এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা। কিন্তু এতে সবরকমের যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। জোড়াতালির এ সেতুর সংস্কার না হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছেন ওই এলাকার কয়েকশো শিক্ষার্থীসহ দশ গ্রামের বাসিন্দারা। সেতুটি উপজেলার চান্দলা ইউনিয়নের খলিফাপাড়ার চান্দনা- চরেরপাথর সড়কে অবস্থিত। ওই সেতু উপজেলা সদরের সঙ্গে ওই এলাকার বাসিন্দাদের সরাসরি যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম। খলিফাপাড়ার খালটির ওপর নির্মিত সেতুটি ভাঙা থাকায় বর্তমানে দুই পাড়ের যোগাযোগে অনেকটা স্থবিরতা দেখা দিয়েছে।
রোববার সরেজমিনে গিয়ে দেখে ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, একযুগ আগে চান্দলা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের খলিফাপাড়া এলাকায় মিয়া বাড়ি সংলগ্ন সেতুটি নির্মাণ করা হয়। গত কয়েক বছর পূর্বে পানি উন্নয়ন বোর্ড খাল খননের কাজ করে। সে সময় ওই সেতুর নিচের মাটিও খনন করে। পরে বর্ষা মৌসুমে পাহাড়িঢলে সেতুর খুঁটির নিচের মাটি সরে গিয়ে সেতুর একপাশের অংশ ভেঙে পড়ে। এতে সড়কটি দিয়ে চলাচলকারী চরের পাথর, খলিফাপাড়া, নোয়াপাড়া, লালখার, মিয়া বাড়ি শান্তিনগরসহ ১০ গ্রামের মানুষের চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। পরে স্থানীয়রা নিজ উদ্যোগে বাঁশ দিয়ে ভাঙা অংশে সাঁকো নির্মাণ করে গত কয়েক বছর হেঁটে পার হচ্ছেন। তবে এ সাঁকো দিয়ে কোনো ধরনের যানবাহন পারাপার হতে পারছে না। ফলে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন ওই এলাকায় বসবাসরত মানুষ ও ওই এলাকায় প্রয়োজনের তাগিদে যাওয়া মানুষ।
খলিফাপাড়ার কলেজ পড়ুয়া রনি আহমেদ বলেন, এ সেতুটি দিয়ে কয়েক গ্রামের মানুষ পায়ে হেঁটে যাতায়াত করছে কিন্তু কোন প্রকারের যানবাহন চলাচল না করায় ভোগান্তির অন্ত নেই আমাদের।
খলিফাপাড়ার কৃষক মতি মিয়া বলেন, আমাদের প্রায় অধিকাংশ জমি দেউস বিলে। পাকাধান ও সার বীজ নিয়ে ও অন্যান ফলফলাদি আনানেওয়ায় আমাদের ভোগান্তির শেষ নেই। ভাঙা অংশে নির্মিত সাঁকোটির অবস্থাও দিনে দিনে নড়বড়ে হয়ে উঠেছে।
চান্দলা গ্রামের পিন্টু মিয়া জানান, বাঁশ দিয়ে তৈরি করা সাঁকোটিতে কয়েকজন মানুষ একসাথে উঠলে কখনো ডানে কখনো বামে কাঁত হয়ে যায়। অথচ সেতুটি মেরামতের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কোনো মাথাব্যথা নেই। কয়েক বছর ধরে শুনি সেতুটি মেরামত করা হবে, কিন্তু মেরামত কবে হবে তা কেউই বলতে পারে না।
এ ব্যপারে চান্দলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক বলেন, খলিফাপাড়া গ্রামের পাশে অবস্থিত খালের ওপর এই সেতুটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অচিরেই এ সমস্যার সমাধান করার লক্ষে আমি কর্তৃপক্ষের নিকট আলোচনা করেছি। তবে সেতুটি সংস্কার হলে এই এলাকার মানুষসহ আশপাশের অনেক গ্রামের মানুষ উপকৃত হবে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ এলজিইডির ব্রাহ্মণপাড়া উপব্জেলা প্রকৌশলী আবদুল রহিম বলেন, গুরুত্বপূর্ণ এই সেতুটির অবস্থা খুবই বেহাল। আমার আগে যিনি ছিলেন তিনিও সেতুটির সংস্কার চেয়ে প্রতিবেদন জমা দিয়েছিলেন। আমিও একাধিকবার এই সেতুটিসহ ১০০ মিটারের আরও কতগুলো সেতুর সংস্কার চেয়ে প্রতিবেদন জমা দিয়েছিলাম। সরেজমিনে পরিদর্শন করে পুন:নির্মাণে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আবারও উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট পাঠিয়েছি।