বৃহস্পতিবার (০৭ নভেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২ থেকে দেড়টা পর্যন্ত মহাসড়কের চান্দিনা উপজেলা গেইট এলাকায় অবস্থান নেন কলেজ শিক্ষার্থীরা। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি করেন। পরে উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে এসে বিক্ষোভ করে তারা।
জানা যায়, গতকাল বুধবার (৬ নভেম্বর) দিবাগত রাতে অধ্যক্ষ মো. মামুন পারভেজ স্যারকে তার কুমিল্লার বাসা থেকে গ্রেফতার করে কুমিল্লা জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। পরদিন বৃহস্পতিবার সকালে কলেজ এসে শিক্ষার্থীরা এ খবর পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে মহাসড়কে অবস্থান নেয়।
চান্দিনা মহিলা কলেজ এর একাধিক শিক্ষার্থী জানায়, এর আগে কোন প্রকার মামলা ছাড়াই কলেজের আইসিটি বিভাগের সহকারি অধ্যাপক এনায়েত উল্লাহ ভূঁইয়াকে চান্দিনার বাসা থেকে তুলে নিয়ে মোটা অংকের টাকা আদায় করার পরও মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠায়। গতকাল (বুধবার) রাতে একই কৌশলে নিজ বাসা থেকে অধ্যক্ষকে তুলে নেয় জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। আমরা এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ক্ষমতার অপব্যাহারের বিচারসহ অধ্যক্ষের নিঃশ্বর্ত মুক্তি চাই।
কলেজ অধ্যক্ষসহ একই কলেজের দুইজনকে পরপর গ্রেফতারের ঘটনায় চান্দিনা মহিলা কলেজ এর শিক্ষকদের মাঝে উৎকন্ঠা বিরাজ করছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক জানান, কলেজ অধ্যক্ষ মামুন পারভেজ কোন রাজনৈতিক কর্মকন্ডারে সাথেও জড়িত নয়। শিক্ষকদের এভাবে লাঞ্ছিত করে সম্মানহানি করার নাম কি রাজনীতি? এখন কলেজে যাওয়া-আসা নিয়ে আমাদের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বাসায় ঘুমানোও দায় হয়ে দাঁড়িছে।
শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধের খবর পেয়ে চান্দিনা থানা পুলিশ ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নাজিয়া হোসেন ঘটনাস্থলে পৌঁছে অধ্যক্ষের মুক্তির বিষয়ে আশ্বস্ত করলে মহাসড়ক থেকে সরে গিয়ে উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে অবস্থান নেয় শিক্ষার্থীরা। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত (বিকাল পৌঁনে ৪টা) শিক্ষার্থীরা উপজেলা পরিষদ প্রঙ্গণে অবস্থান করছে। এদিকে শিক্ষার্থীরা মহাসড়ক থেকে অবরোধ তুলে নিলে জেলা ও হাইওয়ে পুলিশের তৎপরতায় যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
হাইওয়ে পুলিশ ময়নামতি ক্রসিং থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) মো. ইকবাল বাহার মজুমদার জানান, খবর পেয়ে আমাদের হাইওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে এবং শিক্ষার্থীরা মহাসড়ক থেকে সরে গেলে যান চলাচল স্বাভাবিক করি।
চান্দিনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নাজিয়া হোসেন জানান, খবর পেয়ে আমি শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করে মহাসড়ক থেকে সরিয়ে এনেছি। এখন পর্যন্ত (বিকাল পৌঁনে ৪টা) তারা আমার উপজেলা পরিষদেই আছে। অধ্যক্ষ মামুন পারভেজ যেন যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মুক্তি পায় সেই বিষয়টি আমি শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করি।