মাত্র এক হাজার টাকা নিয়ে বিরোধের জের ধরে ২০১৭ সালের ১৮ জুন কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে ট্রাকচালক ইদ্রিস মৃধা (৩৫) কে গলায় গামছা পেচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা দায়ে হেলপার দেলোয়ার হোসেন নামের একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন কুমিল্লার আদালত। বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) দুপুরবেলা কুমিল্লার বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ চতুর্থ আদালতের বিচারক জাহাঙ্গীর হোসেন এ রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হলেন বরিশাল বাকের গঞ্জ উপজেলাধীন শ্যামপুর নগরকান্দা গ্রামের ইউনুস খলিফার ছেলে মোঃ দেলোয়ার হোসেন ওরফে বাদশা।
মামলার বিবরণে জানাযায়- ২০১৭ সালের ১৮ জুন সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা উপজেলাধীন পাগলা ট্রাক ষ্ট্যান্ডে ড্রাইভার ও হেলপার এক হাজার টাকার বিরোধ নিয়ে তর্কবির্তক করিলে গাড়ীর মালিক মোঃ ইসমাইল বিরোধীয় বিষয়টি আপোষ মীমাংসা করে দিলে তারা রাত ১০টার দিকে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে কুমিল্লা চৌদ্দগ্রাম জগন্নাথদিঘীর সংলগ্ন সাইমুন হোটেল এন্ড বিরানি হাউজে রাতের খাবার খেয়ে গাড়ীতে বিশ্রাম করাকালীন সময়ে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে পূর্ববিরোধের জের ধরে রাত ১টা হতে ৩টার মধ্যে যেকোন সময়ে ট্রাকচালককে গলায় গামছা পেচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে আসামি দেলোয়ার হোসেন। এরপর নিহতের চাচাতো ভাই মোঃ হাবিবুর রহমান লোক মারফতে সংবাদ পেয়ে বরিশাল হতে ঘটনাস্থলে এসে ভিকটিম ইদ্রিস মৃধার মৃতদেহ গাড়ীতে দেখতে পায়। এ ব্যাপারে ঘটনার পরদিন নিহতের চাচাতো ভাই বরিশাল বাকের গঞ্জ উপজেলাধীন শ্যামপুর গ্রামের মৃত ফজলে আলী মৃধার ছেলে মোঃ হাবিবুর রহমান (৫৫) বাদী হয়ে হেলপার দেলোয়ার হোসেনসহ ২/৩জনকে আসামি করে দণ্ডবিধির ৩০২/৩৪ ধারায় বিধানমতে চৌদ্দগ্রাম থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করিলে তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই এস.এম. মাহাবুবুল ইসলাম আসামী মোঃ দেলোয়ার হোসেন ওরফে বাদশা (২৮) এর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষে আনীত অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় ২০১৭ সালের ১২ অক্টোবর আসামির বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন (যাহার অভিযোগপত্র নং-৪৪৫)। পরবর্তীতে মামলাটি বিচারে আসিলে ২০১৮ সালের ২০ মার্চ আসামীর বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করিলে রাষ্ট্রপক্ষে মানীত ১১জন সাক্ষীর মধ্যে ৮জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক শুনানী অন্তে আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি পর্যালোচনাক্রমে উল্লেখিত আসামি বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আসামি দেলোয়ার হোসেনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা এবং অনাদায়ে আরও ০৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন।
রায় ঘোষণাকালে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি দেলোয়ার হোসেন ওরফে বাদশা আদালত কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন এপিপি এডভোকেট রেবেকা সুলতানা এবং আসামিপক্ষে এডভোকেট মোঃ বদিউল আমল সুজন।